কক্সবাজারের চকরিয়ার সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের ঔষধ মার্কেটের দোকান থেকে অবৈধ ভাবে ভাড়া দাবী করায় দোকান ভাড়াটিয়ার সাথে বাকবিতন্ডা সৃষ্টিতে নাজেহাল হয় পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিব। এসময় কাউন্সিলর তর্কে জড়িয়ে পড়লে মার্কেটের দোকান ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়েন। কাউন্সিলর মুজিব ও মৌলভী আবছারের নেতৃত্বে আসা ১০-১৫ জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী উত্তেজিত ব্যবসায়ীর রোষানল থেকে পালিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বিকালে চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল সড়কে এ ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল সড়কে বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিব হক মুজিব ও মৌলভী আবছারের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের ঔষধ মার্কেটের দোকানে ভাড়া তুলতে আসে। ওই সময মার্কেটের দোকানের ভাড়াটিয়ার সাথে তর্কে জড়িয়ে যান কাউন্সিলর মুজিব। এতে কাউন্সিলর মুজিব মার্কেটের দোকান ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করলে ব্যবসায়ী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা কাউন্সিলরকে মারধর করে গায়ের জামা ছিড়ে দিয়ে চরম ভাবে নাজেহাল করেন। ঘটনার বিষয়টি স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক ভাবে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম এমপিকে অবহিত করলে তিনি দ্রুত চকরিয়া থানার (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তীকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর নির্দেশনা দেন। থানার ডিউটিরত পুলিশ এসে উত্তেজিত ব্যবসায়ী কবল থেকে তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত ব্যবসায়ীকে শান্ত করে। এরই মধ্যে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ানও ঘটনাস্থলে উপস্থিতি হয়ে ঘটনাস্থল থেকে কাউন্সিলরকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় বাড়িতে পৌঁছে দেন বলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
স্থানীয়রা জানান, চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল সড়কে সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদ কমিটি ও মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি ঔষধ মার্কেটের দোকান ভাড়া নিয়ে দু'পক্ষ দ্বন্দ্বে মেতে উঠেছে। এনিয়ে ইতিমধ্যে দু'পক্ষের মাঝে দোকানের মালিকানা দাবী নিয়ে পক্ষে বিপক্ষের নানা ঘটনা ঘটেছে। মূলত উভয়পক্ষ দোকানের ভাড়া নিয়ে এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি। উভয়পক্ষ তাদের স্ব স্ব কাগজপত্র নিয়ে বৈঠক করে এই দ্বন্দ্ব নিরসন না করলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক লায়ন আলমগীর চৌধুরী জানান, তারা দু'জনই জোহরের নামাজের পর স্ব স্ব বাসায় অবস্থান করেছিল। হঠাৎ করে মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আমাদের ফোন করলে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পাই পুলিশ ব্যবসায়ী ও জনগণকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। কাউন্সিলর মুজিব ও মৌলভী আবছারের নেতৃত্বে মসজিদ মার্কেটে অবৈধ ভাবে টাকা তুলতে এসে এই ঘটনাটি সৃষ্টি করছে বলে তারা দাবী করেছেন।
অপর দিকে, এ ঘটনা নিয়ে চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব সংবাদ সম্মেলন করেছে। তিনি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনাটি মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দের ইন্ধনে পরিকল্পিত ভাবে করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী রাখেন। এনিয়ে তিনি চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান।