কেন্দ্রীয়ভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার দীর্ঘ চার বছর পরও বিতর্কিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ রেখেই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়েছে। ১৩ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দফতর সেলে এ তালিকাটি জমা দেওয়া হয়। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি ১৫১ সদস্যের হওয়ার কথা থাকলেও জমা দেওয়া হয়েছে ২ শতাধিক নামের তালিকা। এ তালিকায় অর্ধশতাধিকই ছিনতাইকারী, মাদকাসক্ত, বিবাহিত, অছাত্র, ঠিকাদার, র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইয়াবা মামলার আসামি, পৃথক নাশকতা মামলার আসামির সন্তান, বিদেশে শ্রমিক হিসেবে কর্মরতসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক বছরের জন্য দুই সদস্যের (সভাপতি তানভীর হোসেন তপু ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম) আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। চার বছর পর সেই মেয়াদোত্তীর্ণ আংশিক কমিটির দুই নেতার জমা দেওয়া ‘পূর্ণাঙ্গ’ এ কমিটি নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদেরও। এসব নিয়ে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে নানা গুঞ্জন, আলোচনা, সমালোচনাও। নতুন কমিটি করার জন্য তালিকা জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রেজাউল করিম সুমন। তিনি বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠনতন্ত্রে ১৫১ জনের কমিটি হওয়ার কথা থাকলেও ২০০ জনের ওপরে নাম জমা দিয়েছে উত্তর জেলা ছাত্রলীগ। জমা দেওয়া এ কমিটিতে বিতর্কিত নেতার নাম রয়েছে বলে অনেক অভিযোগ আমাদের কাজে এসেছে।’ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘গঠনতন্ত্রের প্রশ্ন আসে না। এখানে কেন্দ্রীয় নেতারা যেভাবেই বলেছেন সেভাবেই জমা দিয়েছি। কতজনের কমিটি জমা দেওয়া হলো তা আমাদের ব্যাপার। এগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এগুলো আপনাদের (সাংবাদিক) বলার কী আছে! এসব নিয়ে আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন?’ তবে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সব করছেন বলে জানান তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, একের পর এক অনিয়ম ও বিতর্কের জন্ম দেওয়া এ কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
এরই মধ্যে জমা দেওয়া নতুন কমিটির তালিকায়ও রয়েছে বিতর্কিত লোকদের নামও। সব মিলে উত্তর জেলা ছাত্রলীগ কার হাতে বা কাদের হাতে জিম্মি হচ্ছে সেটাই এখন প্রশ্ন। তারা আরও বলেন, কেন্দ্রে জমা দেওয়া কমিটিতে অর্ধশতাধিক মাদকাসক্ত, ছিনতাইকারী, ইয়াবা মামলায় র্যাবের হাতে গ্রেফতার, বিবাহিত, অছাত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির নামও রয়েছে। এ কমিটিকে ‘অযোগ্য’ দাবি করে উত্তরের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, যোগ্য, ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি না হলে বিতর্ক রয়েই যাবে।