সাত দিনের আল্টিমেটাম শেষেও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেরানীহাট বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করা 'এলাকার বাদশা'কে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা পুলিশ। এর প্রেক্ষিতে কেরানীহাট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড গতকাল (বুধবার) সকালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম— কক্সবাজার মহাসড়কে অবস্থানসহ কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সমিতির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন লিখিত বক্তব্য পাঠের মাধ্যমে এক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য, ১৮ নভেম্বর ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে পুলিশ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বৈঠকে সাত দিনের আল্টিমেটামের কথা বলা হয়। অপরদিকে, সাতকানিয়া থানা পুলিশ দোকানে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানার রামনাথপুর এলাকার সাবুর আলীর ছেলে ইব্রাহিম হোসেন প্রকাশ বাবু (২৩) ও একই জেলার কলারোয়া পৌরসভার আকবর আলীর ছেলে আখতারুজ্জামান (৪৪)কে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল—হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল খান জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়নাল আবেদীন বলেন, 'এলাকার বাদশা' পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে গুম করে হত্যা, দোকানে আগুনসহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে কেরানীহাটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছে চাঁদাবাজরা। এ ঘটনায় থানায় একটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডে মামলা, একটি জিডি, ১৫ টি অভিযোগ দেওয়ার প্রায় এক মাস অতিক্রম হতে চললেও এখনও ঘটনার মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এখনও পর্যন্ত চাঁদাবাজরা ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করে অব্যাহতভাবে হুমকি—ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এখন আতঙ্কিত ও উৎকণ্ঠিত অবস্থায় রয়েছেন জয়নাল তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, এতদিনেও কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় আগামী ২ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, ৫ ডিসেম্বর কেরানীহাট বাজারের সকল দোকান পাট বন্ধ এবং ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম—কক্সবাজার মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যেও কোন বিহিত না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে ব্যবসায়ীরা বাধ্য হবেন বলে জয়নাল তাঁর বক্তব্যে জানান। এছাড়া জয়নাল স্থানীয় সেনাবাহিনী ও ইউএনওকেও এ ব্যাপারে আবেদনের মাধ্যমে অবগত করেছেন বলে তাঁর বক্তব্যে বলেন। এ সময় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, অর্থ সম্পাদক ওয়াহিদুল ইসলাম জাবেদ, পরিচালক ইসমাইল বাদশা ও মো. কামাল হোসেনসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল খান বলেন, দোকানে আগুন দেওয়ার মামলায় জড়িত সন্দেহের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতের মাধ্যমে জেল—হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের কয়েকটি টিম মূল হোতাদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে। আশা করি অচিরেই ভালো ফল পাবো।