আজ মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ইউটিউবে ভিডিও দেখে রাঙ্গুনিয়ার যুবকের কারখানা, মাসে ইনকাম ৩৬ হাজার টাকা

ইসমাঈল হোসেন, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ | প্রকাশের সময় : বুধবার ২০ এপ্রিল ২০২২ ০১:১৪:০০ পূর্বাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

ইউটিউবে ভিডিও দেখে জুতা তৈরির কারখানা করে সফল উদ্যোক্তা হলেন রাঙ্গুনিয়ার যুবক কাজী মো. আরিফ। প্রবাস থেকে ফিরে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নিজের জমানো ১ লাখ পুঁজি দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। শুরু থেকে বিভিন্ন বাঁধা অতিক্রম এখন নিজেকে সফলতার ছোঁয়ায় স্পর্শ করিয়েছেন তিনি। তার তৈরি জুতা শহরের বিভিন্ন নামী দামী মার্কেটে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে তার ব্যবসা ৬ লাখ টাকার পুঁজিতে রুপান্তরিত হয়েছে। জানা যায়, কাজী আরিফের বাড়ি উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের কাজী বাড়ি এলাকায়। নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত কারখানাতে ৪ জন কর্মচারীর সহযোগিতায় প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০-২০০০ জোড়া জুতা ( সেন্ডেল ) তৈরি করেন তিনি। জুতা গুলো যায় চট্টগ্রাম শহরের সানমার, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, ফিনলে স্কয়ার সহ বেশ কিছু নামী শপিং সেন্টারে। এছাড়াও সরবরাহ করে থাকেন রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, হাটহাজারী, রাজস্থলী সহ বেশ কিছু উপজেলায়। খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে তার ইনকাম হয় প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো। এছাড়াও বর্তমানে তিনি বিভিন্ন এনজিও'র হয়ে জুতার বিষয়ে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এছাড়া কারখানা দেওয়ার পর নিজের ব্যক্তিগত ২লাখ টাকার ঋণ ও পরিশোধ করেন তিনি। জানা যায়, প্রবাস থেকে ফিরে এসে কাজী আরিফ দীর্ঘদিন দেশে অবস্থান করে। এসময় তিনি কি করবেন কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সে সময়ে কোভিড পরিস্থিতির কারণে নতুন ভিসা নিয়ে বিদেশও যেতে পারেননি। এরপর সিদ্ধান্ত নেন নিজেই উদ্যোক্ত হবেন। পুঁজি ছিল ১লাখ টাকা। পরে ইউটিউব ভিডিও দেখা শুরু করে কিনে নিয়ে আসেন জুতা তৈরির মেশিন। ঢাকার গুলিস্তান, রসুলপুর, কামরাঙ্গিচড় থেকে কাঁচা মাল সংগ্রহ করেন। প্রথমে নিজেই শুরু করে দেন জুতা তৈরির কাজ। বেশ সাড়া পেয়ে যায়। এরপর আরো দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে কাজের পরিধি বাড়ান। নিয়োগ দেন আরো ৪ জন কর্মচারী। বর্তমানে ৪ জনকেই হিমশিম খেতে হয় এই কারখানায়। Race নামে পাওয়া যাচ্ছে তার তৈরি জুতা গুলো। সিমস প্রকল্প প্রত্যাশী কতৃক উক্তোক্তা হতে চাই এমন ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন কাজী আরিফ। এছাড়াও তিনি Helvetas Bangladesh ইউসেফ ট্যাকনিক্যাল স্কুলে আয়োজিত জব ফেয়ারে উক্ত্যোক্ত হিসেবে আমন্ত্রণ পান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমার নিজের উপর বিশ্বাস ছিল আমি পারবো। ইউটিউব দেখেই ব্যবসা শুরু করি। পরবর্তীতে সিমস প্রকল্প প্রত্যাশী আমাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। আমি তাদের হয়ে জুতা তৈরির উপর মহিলাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করি। সামনে সরকারি বা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতা পেলে কারখানায় পরিধি আরো বাড়াতে চায়। শো, কেটস সহ দামি জুতা তৈরি করতে চায়। আরো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায়। সিমস প্রকল্প নিরাপদ অভিবাসন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সমন্বয়কারী মো. মিজানুর রহমান বলেন, কাজী আরিফ খুবই পরিশ্রমি একজন যুবক। তিনি নিজ মেধায় সফল হয়েছেন। তার মতো যুবক সমাজের বেকারদের জন্য অনুকরণীয়। বর্তমানে আরিফ আমাদের হয়ে জুতা তৈরির উপর মহিলাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও এর আগে আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে তাকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করেছিলাম। তার মতো যুবকদের জন্য আমাদের এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।