তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত ও তা থেকে সৃষ্ট সুনামিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে টোঙ্গার কিছু দ্বীপ। ধ্বংস হয়ে গেছে ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি। ঘটনার প্রায় তিনদিন পর এ নিয়ে প্রথমবার মুখ খুলেছে টোঙ্গা সরকার। এটিকে ‘অভূতপূর্ব বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
এক বিবৃতিতে অগ্ন্যুৎপাত-সুনামিতে তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে টোঙ্গা সরকার। এদের মধ্যে দুজন স্থানীয় ও একজন ব্রিটিশ নাগরিক।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত শনিবার হাঙ্গা টোঙ্গা হাঙ্গা হা’পাই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে আশপাশের দ্বীপগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি দ্বীপের সব বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আরেকটি দ্বীপের মাত্র দুটি অবশিষ্ট রয়েছে।
আগ্নেয়গিরি থেকে এখনো ছাই ওড়ায় উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবীরা টোঙ্গার প্রধান বিমানবন্দরের রানওয়ে পরিষ্কারে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন, যেন অতিআবশ্যক বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সহায়তা নিয়ে প্লেনগুলো দ্রুত পৌঁছাতে পারে।
টোঙ্গা সরকার জানিয়েছে, দেশটিতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন। তবে স্থানীয় কিছু টেলিফোনসেবা এখনো চালু রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি সচল করতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপগুলো থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এদিকে, অগ্ন্যুৎপাতে টোঙ্গার দ্বীপগুলোর ভয়াবহ অবস্থার দৃশ্য ফুটে উঠেছে স্যাটেলাইটের ছবিতে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির রাজধানী নুকু’আলোফাও।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) মহাকাশপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার টোঙ্গা দ্বীপপুঞ্জের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। এর কয়েকটি তোলা হয়েছে ২০২১ সালের এপ্রিলে এবং বাকিগুলো অগ্ন্যুৎপাতের পরে।
ছবিতে দেখা যায়, আগ্নেয়গিরি থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টোঙ্গার রাজধানী শহর পুরোপুরি ছাইয়ের চাদরে ঢাকা। আর অগ্ন্যুৎপাতের কেন্দ্রে থাকা দ্বীপটি এখন প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। এর মাত্র কয়েকটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন অংশ পানির ওপরে দেখা যাচ্ছে।
অগ্ন্যুৎপাতে শক্তিশালী বিস্ফোরণে সৃষ্ট ছাইয়ের মেঘ ৬৩ হাজার ফুট পর্যন্ত ওপরে উঠেছিল, এর শকওয়েভ টের পাওয়া গেছে সুদূর আলাস্কাতেও।