জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ধরনের ২১টি সমুদ্রগামী জাহাজ যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ’র মোহনা হলরুমে বিএসসির ৪৬তম বার্ষিক সাধারণ সভায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বিএসসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আন্তর্জাতিক নৌপথে নিজস্ব জাহাজ দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পরিচালনা করতে বিএসসি গড়েছিলেন তিনি।
‘বাংলার দূত’ প্রথম জাহাজ বিএসসির।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেয়ার হোল্ডারদের গঠনমূলক সমালোচনা পরামর্শ আমাদের কাম্য। বিএসসির উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ছয়টি নতুন জাহাজ কেনা হয়েছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন হয়েছে, প্রথম টার্মিনালের ভিত্তি স্থাপন হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল উদ্বোধন হয়েছে। বে টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মোংলা ও পায়রা বন্দর আপগ্রেডেশন হচ্ছে। মাতারবাড়ীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল হয়েছে। এলএনজি পরিবহনে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাগ ভ্যাসেল অ্যাক্ট অনুযায়ী পণ্য পরিবহনে বিএসসি অগ্রাধিকার পাবে।
‘কৈবল্যধামে বিএসসির নিজস্ব আনসার ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। খুলনায় ১১ দশমিক ৭৩ কাঠায় বিএসসির শপিং কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে। এ জায়গার অসম চুক্তি হয়েছিল। তা বাতিল করে বিএসসির মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে’।
তিনি বলেন, বিএসসির জাহাজে মেরিন একাডেমির ক্যাডেট নিয়োগ করা হচ্ছে। নারী ক্যাডেটদের এক বছরের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পৃথিবীর নবম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামে গড়ে তোলা হচ্ছে। চারটি নতুন মেরিন একাডেমি করেছে সরকার। আরও তিনটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি গড়তে সরকার কাজ করছে।
শেয়ার হোল্ডারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোভিডকালে বিরাট সংকটে ছিল বিএসসি। আপনারা আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছিলেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিএসসির শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এজিএমে অনুমোদন হয়েছে। কর সমন্বয়ের পর ২৪৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা নিট লাভ হয়েছে। ৩১৮তম সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে করার। আগামীতে সাগরে ভেসে ভেসে এজিএম করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডোর মো. জিয়াউল হক বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট আয় ৬৬৭ দশমিক ২৩ কোটি টাকা। মোট ব্যয় ৩৭৫ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। ২৪৬ দশমিক ২৯ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরের চেয়ে নিট আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বিএসসিকে ৩ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দেবে একটি বিদেশি সংস্থা। আমরা দেশের প্রধান শিপিং সংস্থা হতে চাই। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডুয়েল ফুয়েল কনটেইনার জাহাজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। শিপিং সম্পর্কিত আইন মেনে সময়ানুগ সিদ্ধান্ত, কৌশল নিয়ে বিএসসি এগিয়ে যাচ্ছে। বিএসসির আয় বাড়লে শেয়ার হোল্ডারদের বেশি লভ্যাংশ দেওয়া হবে।
এজিএমে উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, স্বতন্ত্র পরিচালক প্রফেসর এম শাহজাহান, বিএসসির সদস্য ড. পীযূষ দত্ত, পরিচালক (প্রযুক্তি) মো. ইউসুফ, মোস্তফা জামানুল বাহার প্রমুখ।