আজ মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সেপ্টেম্বরে খুলবে বঙ্গবন্ধু টানেল

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২১ জুলাই ২০২৩ ০১:২৬:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়

 

 

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। সবকিছু ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলটি যান চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, কর্ণফুলী টানেলে যানবাহন চলাচলের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে টানেলের ভৌতকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৯.৭ শতাংশের বেশি। সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৯৮.২ শতাংশ। সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) অনুমোদন হওয়ার পর টানেলের দুই প্রান্তে দুটি পুলিশ ফাঁড়ি, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এবং টিউবের দুই প্রান্তে প্রবেশমুখে গাড়ি তল্লাশির জন্য স্ক্যানার বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে। এর আগে ১৩ জুলাই যানবাহনের শ্রেণি অনুযায়ী টোলহার চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতু বিভাগ। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১২ ধরনের যানবাহনকে টোল দিতে হবে টানেল পারাপারে। পারাপারের জন্য সর্বনিম্ন ২০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাইভেটকারের। সর্বোচ্চ চার এক্সেলবিশিষ্ট টেইলারের টোল ১ হাজার টাকা। পরবর্তী প্রতি এক্সেলের জন্য বাড়তি টোল দিতে হবে ২০০ টাকা। টানেল দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের সুযোগ রাখা হয়নি।

 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘টানেল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন লাস্ট ফিনিশিং চলছে। দু-এক মাসের মধ্যেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার চেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর শিডিউল পাওয়া সাপেক্ষে উদ্বোধনের দিন ধার্য করা হবে।’ বঙ্গবন্ধু টানেল যান চলাচলের জন্য চালু হলে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। এ টানেলকে দেশের যোগাযোগ খাতে দ্বিতীয় বিপ্লব মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বৃহত্তর চট্টগ্রামে শিল্পায়ন, অর্থনীতি, পর্যটনসহ অন্যান্য খাতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। টানেলের মাধ্যমে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর ও মহেশখালীর সঙ্গে যুক্ত হবে পুরো দেশ। এরই মধ্যে দেশের বাণিজ্যিক হাব হিসেবে মহেশখালীকে গড়ে তুলতে তৈরি করা হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প। নির্মাণাধীনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে গভীর সমুদ্রবন্দর, এলএনজি টার্মিনাল, এলপিজি টার্মিনাল, অয়েল টার্মিনাল, গ্যাস ট্রান্সমিশন, অয়েল রিফাইনারি, এনার্জি ও ফুড স্টোরেজ, ট্যুরিজম, এমব্যাংকমেন্ট ও ওয়াটারফ্রন্ট ইকোনমিক জোন। এ মেগা প্রকল্পগুলোয় বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য প্রতিদিন চলাচল করবে শত শত গাড়ি; যা বঙ্গবন্ধু টানেল ব্যবহার করবে। এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টানেল পুরোদমে চালু হলে প্রতিদিন গড়ে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি চলাচল করবে। বছরে সে সংখ্যা দাঁড়াবে ৬৩ লাখে। ২০২৫ সালে টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে; যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী যানবাহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ ১ লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। সূত্র জানান, ২০১৫ সালের নভেম্বরে এ টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। বাংলাদেশ সরকার ও চায়নিজ এক্সিম ব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।