জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্যে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র চিঠি ওবায়দুল কাদেরের কাছে হস্তান্তর করেন পিটার হাস।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র একটি চিঠি আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। শুনেছি যে এরকম দুইটি চিঠি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কাছেও দিয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আগেও বলেছেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং কোনো শর্ত ছাড়া সংলাপ। এই চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে আমার দলের সভাপতি এবং নির্বাহী কমিটির সহর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। চিঠির সাড়া দিতে হলে আমার দলের দৃষ্টিকোন থেকেই চিঠির জবাব দেব।
চিঠিটা পড়েছেন কিনা- প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, এক পৃষ্ঠার চিঠি। আমি দেখছি।
সংলাপ আর হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা এখন আর চিন্তায় নেই। সেটা আগে ছিল, সে সময় চলে গেছে।
সংলাপ নিয়ে আবারও ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। সংলাপ হচ্ছে কিনা এ প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, সে কথা কীভাবে বলবো। কোনো রাজনৈতিক দল, যারা গণতান্ত্রিক চর্চা করে তারা সংলাপ চায় না এমন কথা বলতে পারে না। কিন্তু একটা সময় আছে। আজকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হচ্ছে, আপনি সংলাপ করবেন কবে, আমি সে কথা বলতে চাই।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সংলাপ কি সম্ভব- প্রশ্নে তিনি বলেন, সংলাপের কোনো সুযোগ নেই।
তাহলে বিএনপি ছাড়া কি দেশে আবার নির্বাচন হতে যাচ্ছে- প্রশ্নে তিনি বলেন, এ নিয়ে বিএনপিকে প্রশ্ন করুন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সময় এখন অনেক সংক্ষিপ্ত। এখন যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। তফসিল ঘোষণার সময়টা দূরে না। এমনটাই আমরা শুনতে পাচ্ছি। এমতাবস্থায় আমাদের মতো দেশে সংলাপ যদি করতে হয়, সংলাপ তো আর কাউকে বাদ দিয়ে করা যাবে না। সংলাপ তো এমন না যে দুইটি দলের সঙ্গে করতে হবে। সংলাপ করতে হলে সেটা শতাধিক দলের সঙ্গে করতে হবে। এখন এই সময়ে কখন সংলাপ হবে, কখন নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলবে সেটা একটা বিষয়। আর একটা বিষয় হচ্ছে সংলাপের বিষয়ে আমাদের যে সিদ্ধান্ত সেটা ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার। আমরা আগেও বলেছিলাম শর্তযুক্ত কোনো সংলাপের বিষয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা তাদের একদফা- প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিগুলো প্রত্যাহার করুক। তারপরে আমরা চিন্তা ভাবনা করবো। সেটা অনেক আগের কথা, সে সময় পেরিয়ে গেছে। এখন আর সেই পেরিয়ে যাওয়া সময়কে এগিয়ে আনার সুযোগ নেই। কাজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সময়টা একটা বিরাট ফ্যাক্টর। চিঠির বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রী ও দলের সঙ্গে আলাপ করবো। আমি বলেছি, তারপর জানাবো। আজকেই জানাবো। ’
আজ তফসিল ঘোষণা হচ্ছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা তো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশন আলাপ-আলোচনা, চিন্তা-ভাবনা করেই এটা করবে। এটা তাদের এখতিয়ার। এখানে আওয়ামী লীগের কিছু করণীয় নেই।
জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চায় না- এ বিষয়ে কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি বা তাদের কেউ কেউ যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে না চায়, এটা তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত। আমরা তো জোর করে কাউকে আমাদের সঙ্গে টেনে আনছি না।