ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার ইউনিয়নের গজারিয়া জেবুননেচ্ছাপাড়া উচ্চ বিদ্যালেয়র প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুমিন মজুমদারকে মারধর করল একই স্কুলের নৈশপ্রহরী মো: ইব্রাহীম খলিল। গতকাল ৮ আগষ্ট(বৃহস্পতিবার) সকালে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, নৈশপ্রহরী ইব্রাহীম খলিল বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক মেম্বারের পুত্র। সে বাগান বাজার ইউনিয়নের শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছে। এদিকে, মুমিন মজুমদার দাঁতমারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক। এসময় তিনি দলীয় প্রভাব কাটিয়ে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও কর্মচারীদের গায়ে হাত তুলাসহ নানা কর্মকান্ড করে আসছিল।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে মাস্টার মুমিন নৈশপ্রহরী ইব্রাহীমকে শ্রমিকদল করার কারনে বিভিন্ন সময় তুচ্ছতাচ্ছিল্য আচরনসহ মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করেছেন৷ সূত্রটি জানায়, দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভের বহৃিপ্রকাশ হিসেবে প্রধান শিক্ষক মুমিন মজুমদারকে মারধর করে সে।
এই দিকে এ ঘটনার পর স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন। প্রধান শিক্ষক মুমিন নৈশপ্রহরীর মার খেয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সুকৌশলে উত্তপ্ত করে তুলে। তার সুবাদে নৈশপ্রহরী ইব্রাহীম খলিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জসীম উদ্দিন এসে নৈশপ্রহরী ইব্রাহীমকে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত বিদ্যালয়ের প্যাডে তাৎক্ষনিক বহিষ্কার ঘোষণা করে এবং স্কুলে ২ দিনের ছুটি ঘোষণা দেয়।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মুমিন মজুমদার বলেন, সে হঠাৎ আমার সাথে উত্তেজিত হয়ে গায়ে হাত তুলে। আমি এ ঘটনা উপজেলা ম্যাধমিক শিক্ষা অফিসার ও ইউএনও মহোদয়কে মুঠোফোন অবহিত করেছি। তারা আমাকে এর সুষ্ঠু বিচার করবেন বলে জানিয়েছেন। নৈশপ্রহরীকে বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুমিন কোন উত্তর না দিয়ে সটকে পরেন।
নৈশপ্রহরী মো: ইব্রাহীম খলিল, এ ঘটনার বিষয়ে কোন উত্তর দিতে না চাইলেও পরে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক মুমিন মাস্টার বিভিন্ন সময় অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার সাথে জড়িত ছিল। পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে আমাকে বিভিন্ন সময় হেনস্তা করতো। আজ সকালে সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ বানিজ্যের ব্যাপারে কথা তুললে স্যারের সাথে আমার বাকবিতন্ডা হয়। এসময় রাগে ক্ষোভে স্যারের গায়ে হাত তুলেছি।।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জসীম উদ্দিন বলেন, কিছুদিন পূর্বে আয়া ও দপ্তরি নিয়োগের সময় মুমিন মাস্টারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের কথা তুলে নৈশপ্রহরী ইব্রাহীম খলিল। তার হিসাব চাইতে গিয়ে মুমিন মাস্টারের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে এ ঘটনা ঘটে। আগামী রবিবার এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সাথে বসে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য স্কুল ছুটি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি ও বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটিকে জানানোর কথা বলেছি।