আড্ডা, গান ও স্মৃতিচারণায় সবাই ফিরে গিয়েছিলেন ফেলে আসা সোনালী দিনে। কলেজ জীবনের শিক্ষক ও সতীর্থদের কাছে পেয়ে জড়িয়েছেন আলিঙ্গনে। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের দিনটি পার করেছেন এভাবেই।
শুক্রবার (১৩ মে) চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুনর্মিলন-২০২২ এর আয়োজন করা হয় নগরের নেভি কনভেনশন সেন্টারে। সেখানে কলেজের প্রশাসনিক ভবন, রেড বিল্ডিংসহ বিভিন্ন ভবনের ছবি প্রদর্শন করা হয়। এসব ছবির সামনে সাবেক শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ছবি তুলেন, আড্ডায় মাতেন।
সকাল ৯টায় পুনর্মিলনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অধ্যাপক চিত্ত প্রসাদ তালুকদার (৯৮)। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী আহমদ কায়কাউস। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এসময় সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান।
এরপর পুনর্মিলনী আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী আলী আহমদ ও সদস্য সচিব এস এম আবু তৈয়ব বক্তব্য দেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সমন্বয়ক একরামুল করিম। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ স্মারক বক্তৃতা দেন চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হাসান।
এরপর শুরু হয় স্মৃতিচারণ পর্ব। বক্তব্য দেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইসমাইল খান, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, একে খান গ্রুপের সালাউদ্দিন কাশেম খান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. আবদুল করিম, সাবেক সচিব মো. নাসির উদ্দিন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহফুজা আখতার, দৈনিক পূর্বকোণ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী, লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া প্রমুখ।
স্মৃতিচারণায় একে খান ফাউন্ডেশনের নামে চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি চালুর ঘোষণা দেন সালাউদ্দিন কাশেম খান।
অধ্যাপক চিত্ত প্রসাদ তালুকদার বলেন, ১৯৪২ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত আমি চট্টগ্রাম কলেজে পড়েছি। আমাদের সময়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ভালোবাসা পেয়েছি। আমার বন্ধুদের কাউকে আজ আর দেখি না। ছাত্রদের অনেককেই দেখলাম, খুব ভালো লাগছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু সিকান্দার খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোহিত উল আলম, বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া বেলা, অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম, আইনজীবী আবুল হাশেম, ডা. শেখ শফিউল আজম প্রমুখ।
স্মৃতিচারণা শেষে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর প্রায় ২ হাজার ২০০ প্রাক্তনী যোগ দেন কৌতুক পরিবেশন, কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ ও গল্প বলা, কলেজ বন্ধুদের পরিবেশনায় গানের অনুষ্ঠানে। সন্ধ্যায় অতিথি শিল্পীদের সঙ্গে গানে গলা মিলিয়ে সবাই ফিরে যান ফেলে আসা দিনগুলোর কাছে।
পুনর্মিলন অনুষ্ঠান উদযাপন প্রচার উপ-কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক শিমুল নজরুল জানান, দেশের নানা প্রান্ত থেকে এসেছিলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। কেউ এসেছেন বিদেশ থেকেও। সঙ্গে ছিল সন্তানরা। র্যাফেল ড্র-তে শেষ হয় এই আয়োজন।