চট্টগ্রামে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সমুহের এ ধরনের একাধিক ভিডিও প্রতিবেদক এর হাতে আসে। ভিডিওতে দেখতে দেখা যায় আদালত চলাকালীন সময়ে আনুমানিক দুপুর ২ ঘটিকার মধ্যে আইনজীবীরা বিচারকের খাসকামরাতে জুতো খুলে গাউন পরিধান করে প্রবেশ করছেন এবং বের হচ্ছেন । একজন আইনজীবী কে জিজ্ঞেস করলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন আদালত চলাকালীন সময়ে বিচারক এজলাসে না উঠে খাসকামরায় শুনানি করবেন বলেছেন এবং সে কারণে তিনি জুতো খুলে গাউন পরিধান করে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করেছেন , তিনি প্রার্থীতমতে আদেশ পেয়েছেন। এই ভিডিওটি প্রতিবেদক এর হাতে আসার পর প্রতিবেদক চট্টগ্রামের বিভিন্ন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঘুরে দেখেন এবং একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে বিচারপ্রার্থী জনগণ ও আইনজীবীদেরকে দেখতে পান। তারা বিচারকের খাসকামরায় প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছেন। এসব বিষয়ে আইনজীবীরা বলেন বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশের মাধ্যমে আইনজীবীরা যেমন মনমত আদেশ পেয়ে থাকেন তেমনি বিচারের নামে অনেক সময় অবিচার ও হয়ে থাকে। আইনজীবীরা কথা বলার আগেই বিচারক মনগড়া আদেশ দিয়ে দেন। আইনের বিধান মতে কোন আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত ( বিচারক) যদি আসামির জামিন শুনানি না করেন তবে প্রকাশ্য আদালতে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিতে হবে। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় যে, চট্টগ্রামের প্রায় সবগুলো আদালতে বিচারক একবার যদি বিচার কাজ শেষ করে নেমে যায় তারপর যদি আদালতে আসামি হাজির করা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের জামিন শুনানি না করে খাস কামরায় বসে পরবর্তী দিনের তারিখ দিয়ে আসামীদেরকে CW মুলে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। বিচারকের খাস কামরায় জুতো খুলে এজলাসে প্রবেশ করে মামলার শুনানি করতে সিনিয়র আইনজীবীরা অনীহা প্রকাশ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত। আবার খাসকামরায় শুনানির কারণে অনেক আইনজীবীরা মাত্রা অতিরিক্ত টাকা দাবি করছেন বলে অভিযোগ আসে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সমূহের গেলে দেখা যায় অবস্থা আরও গুরুতর। সেখানে দেখা যায় বিচারপ্রার্থী জনগনতো আছেন তার সাথে অনেক সিনিয়র আইনজীবীরা বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং বিচারক তাহার নিজের খাসকামরায় মামলার শুনানি গ্রহণ করেন এবং অনেক সময় অটো ফাইলিং এর নামে খাসকামরায় একা একা মামলার আদেশ প্রদান করেন এবং মামলার কোনো প্রকার গুনাগুন বিচার না করে মামলা খারিজ করে দেন , যার মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী জনগণ অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন বলেন "আমি এসব বিষয় একাধিকবার অভিযোগ পেয়েছি এবং বিভিন্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে প্রকাশ্যে বলেছি তারা যেন এসব বিষয় নিয়ে এসব বিষয় থেকে বিরত থাকেন। বিচারকার্য পরিচালিত হবে এজলাসে, খাসকামরায় বিচার কার্য পরিচালনা করার সম্পূর্ণ আইন এবং ন্যায়বিচার পরিপন্থী।" বিষয়ে সিনিয়র আইনজীবী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে জানান বিচারকের এজলাসে প্রবেশ করে শুনানি করা মানহানিকর এবং বিচারকের এজলাসে মামলার বিচারকাজও শুনানি হওয়া সম্পূর্ণ আইন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পাঠাগার সম্পাদক এডভোকেট মোঃ জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন "খাসকামরায় বিচারকার্য পরিচালনা করা, আদালতে আইনজীবীরা জুতা খুলে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি ও মানহানিকর। তিনি এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।"