কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে আজ ৩১ জানুয়ারি। এ উপলক্ষে মামলায় অভিযুক্ত বিতর্কিত বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমারসহ আসামিদের আদালতে আনা হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টায় প্রিজনভ্যান থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে তাদের নামানো হয়।
রায় কেন্দ্র করে আদালতের চতুর্পাশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৃষ্টির ৩৮ বছরের ইতিহাসে এ প্রথম এত দ্রুত কোনো হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে। এর আগে হত্যা কিংবা ফৌজদারি কোনো মামলায় এত বিপুল সংখ্যক সাক্ষী নেওয়ার নজির নেই। নজির নেই এত স্বল্প সময়ে চার্জগঠন, শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনেরও। সবকিছু যেন অবিশ্বাস্য গতিতেই এগিয়েছে। তাই সবার দৃষ্টি এখন এ রায়ের দিকেই।
সেই মতেই সবকিছুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সোমবার সকাল হতেই পুরো আদালত পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সবখানেই পিনপতন নীরবতা। আদালত পাড়ার চারপাশে, পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তাকর্মী। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনীর নানা বিভাগের লোকজন কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘিরে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে পুলিশের সর্বচ্চো নজর রয়েছে। আদালতে নিরাপত্তার স্বার্থে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও বিপুল সংখ্যক শৃংখলা বাহিনীর সদস্য রয়েছে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত সৃষ্টির ৩৮ বছরের ইতিহাসে এ প্রথম এত দ্রুত কোনো হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে। এ মামলায় ৮৩ সাক্ষীর মাঝে ৬৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এর আগে হত্যা কিংবা ফৌজদারি কোনো মামলায় এত বিপুল সংখ্যক সাক্ষী নেওয়ার নজির নেই। মাত্র ৩৩ কার্য দিবসে আমরা এ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম শেষ করতে সক্ষম হয়েছি। তেমনি সক্ষম হয়েছি সিনহা হত্যার বিষয়টি প্রমাণে। আমাদের আশা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন প্রদীপ ও অভিযুক্তরা।
স্বল্প সময়ে সিনহা হত্যার রায় দেশে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।