বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে মাত্র ৩-৫ মিনিটেই মোবাইল সেটের আইএমআইএ (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) পরিবর্তন করে ফেলা যায়। চোরাই ও ছিনতাই করা মোবাইল সেটের আইএমআইএ নম্বর পরিবর্তন করে পুনরায় বিক্রি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) উত্তর বিভাগের কার্যলায়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন এই কথা জানিয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাতে নগরের কোতোয়ালী থানার রিয়াজউদ্দীন বাজার, রেলস্টেশন ও দেওয়ান বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫৬টি মোবাইল চোরাই মোবাইল, ৭টি ল্যাপটপ, আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ৮টি ডিভাইস, ২টি ফ্লাশিং ডিভাইস উদ্ধার করেছে ডিবি উত্তর বিভাগ। গ্রেফতার ৬ জন ২-৪ বছর ধরে এ কাজ করছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. খোরশেদ আলম (৩২), মো. কামাল (৩২), মো. সুরুজ মিয়া (৩২), জয় চৌধুরী (২৫), মো. বাবু (৩২) ও মো. তানভীর হাসান (২৫)।
উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নগরের পুরাতন রেলস্টেশন থেকে খোরশেদ ও কামালকে ৪টি মোবাইলসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে খোরশেদ ও কামালের তথ্যের ভিত্তিতে নগরের রিয়াজউদ্দীন বাজার আব্দুল লতিফ মার্কেটের ষষ্ঠ তলা থেকে সুরুজ মিয়া, জয় চৌধুরী, মো.বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। খোরশেদ ও কামাল চোলাইকৃত মোবাইল সুরুজ মিয়া, জয় চৌধুরী, মো.বাবুর কাছে বিক্রি করতেন। আব্দুল লতিফ মার্কেটের ষষ্ঠ তলার ১৫৪ নম্বর রুম থেকে ১৬টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, নগরের দেওয়ান বাজার চোরাই মোবাইলসমূহ আইএমইআই পরিবর্তন করে মো. তানভীর হাসান। আইএমইআই পরিবর্তন করে মোবাইলসমূহ মার্কেটে বিক্রি করে। তানভীরের কাছ থেকে ১৩৬টি মোবাইল,আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ৮টি ডিভাইস, ২টি ফ্লাশিং ডিভাইস ও ৭টি ল্যাপটপ উদ্ধারসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। তানভীর নগরের একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা পাস করেছে ও নগরের একটি কলেজের বিএসসির শিক্ষার্থী।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ছিনতাই, চোরাই মোবাইল কিনে আইএমইআই পরিবর্তন করে নানান অপরাধে কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করে আসছিল। অভিযানের সময় আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের কাজ করছিল তানভীর। তার বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ল্যাপটপ ওপেন থাকলে মাত্র ৩-৫ সেকেন্ডের মধ্যেই আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে ফেলে। যদি ল্যাপটপ ওপেন না থাকে তাহলে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। এছাড়া যেকোনও আন্ড্রয়েড মোবাইলের লক খুলে আবার বিক্রি করতো। তানভীর গত ৩-৪ বছর যাবত আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজ করে। মাঝখানে কিছুদিন আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজ বন্ধ রেখেছিল। পুনরায় টাকার লোভে আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে জড়িয়ে পড়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিবি গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার মো. কামরুল হাসান ও পরিদর্শক মোক্তার আহমেদ।