রাত পোহালে শুরু হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় অবস্থিত ১০৬টি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌছে গেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত থাকলেও ভোটকেন্দ্রে যাওয়ায় নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ ভোটারেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার মিরসরাই আসনে ১৯৭০ সাল থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হয়েছেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এবার তিনি নির্বাচন করছেন না। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উনার ছেলে মাহবুব উর রহমান রুহেল। তাই কেন্দ্র ও জেলার সকল নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি এ আসনে। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেলের নৌকা প্রতিকের সাথে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের ঈগল প্রতিকের সাথে। আওয়ামী লীগের ‘অভিমানী’ অনেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের জন্য কাজ করছেন। সবার মনে একটাই প্রশ্ন? এমপি কি আবারো একই ঘরে থেকে যাবে। নাকি ৫৩ বছর পর এমপি পরিবর্তন হবে।
জানা গেছে, উপজেলায় ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫২৫ জন ভোটার রয়েছে। তারমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে ৩০ থেকে ৩৪ হাজার করে ভোটার রয়েছে। নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের জন্য এসব ইউনিয়নের ভোট ব্যাংক নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। বেশী ভোটার থাকা ইউনিয়নগুলো হচ্ছে জোরারগঞ্জ, করেরহাট ও ইছাখালী ইউনিয়ন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১০৬টি। বুথ রয়েছে ৭১৭টি। নির্বাচনে ১০৬জন প্রিজাইডিং, ১০৬ জন সহকারি প্রিজাইডিং, ৭১৭ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বে থাকবেন। নির্বাচনে ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া জেলা পুলিশের ৩৭২ জন, হাইওয়ে পুলিশের ১২ জন, র্যাবের ১৭ জন, সেনাবাহিনীর ৪৫ জন, বিজিবির ১৪১ জন, আনসার ১২৭২ জন সহ মোট ১ হাজার ৮’শ ৫৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
উপজেলা ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরত এলাকার ভোটার নুরুল হুদা বলেন, বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। এবার কেন্দ্রে যেতে পারবো কি না শঙ্কায় রয়েছি।
হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের মুছা মিয়া বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কেন্দ্র এবং আশপাশে থাকবে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে অনেক ভোটারের বাড়ি দূরে। পথে যদি আমাদের বাধা দেয়, প্রশাসন তো এত দূরে আসবেনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন (ঈগল), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) প্রার্থী মোহাম্মদ ইউসুফ (টেলিভিশন), জাতীয় পাটির মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন চৌধুরী (লাঙল), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী (হাতপাঞ্জা), সুপ্রীম পাটির মোহাম্মদ নুরুল করিম আফছার (একতারা) ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী আব্দুল মন্নান (চেয়ার)।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। আমরা উপজেলার সবকটি ভোট কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবছি। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট প্রদানের পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করছি।’