আজ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১
ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান

হালদার ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়

মাহমুদ আল আজাদ হাটহাজারী প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৪ মে ২০২৩ ০৬:০২:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গুমানমর্দন ইউনিয়নের পূর্ব গুমানমর্দন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হালদার ভাঙ্গনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টি হালদা পাড়ে হওয়ায় একটি কক্ষ ইতিমধ্যে হালদায় তলিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। যা পরবর্তীতে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাধ্যমে ব্লগ ও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা হয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হালদার পাড়ের এই বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণভাবে। যদিও ভাঙ্গনরোধে ইতিমধ্যে ঐ বিদ্যালয়ের আশপাশে প্রায় ৭০০-৮০০ ফিট জুড়ে ব্লগ দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে, বর্ষা মৌসুম আসলেই এই বিদ্যালয়ের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। বর্ষায় হালদার পানি বাড়লে আতঙ্ক কাজ করে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে। যদিও বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে তারপরও আসা যাওয়াতে ঝুঁকি থেকেই যায়। উক্ত বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাজনীন সুলতানা নিপুণ ও মিসকাত আন নূর বলেন, বর্ষায় আমাদের অনেক ভয় লাগে। তখন পানি অনেক উপরে উঠে যায়। যাওয়া আসায় আমাদের খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। আমাদের বিদ্যালয়টি সুবিধাজনক স্থানে সরিয়ে নিলে আমরা উপকৃত হব। এবিষয়ে কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের লেখাপড়া ও আনুষাঙ্গিক সবকিছু ঠিক থাকলেও বর্ষা মৌসুমে ‌ অনেক উৎকণ্ঠায় দিন কাটে তাদের। হালদার খুব নিকটে হওয়ায় যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের বিপদ হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য তারা বিদ্যালয়টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। উক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ ফারুক আলম এবিষয়ে বলেন, আমরা নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়েছি কিছুদিন হল। ইতিমধ্যে আমরা বিদ্যালয় স্থানান্তরের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজছি। আশা করি খুব শিগগিরই জায়গার ব্যবস্থা করে বিদ্যালয়টি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে। এবিষয়ে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন প্রতিবেদককে জানান, বর্ষাকালে আমরা উদ্বিগ্ন থাকি কারণ পাশেই হালদা। তবে, আমরা ও পরিচালনা পরিষদের সহায়তায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মোটামুটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া নিয়ে আমরা চিন্তিত থাকি। এছাড়া এ বিষয়ে আমরা জেলা উপজেলায় লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করি জায়গার ব্যবস্থা করা গেলে অচিরেই বিদ্যালয় স্থানান্তর করা যাবে। উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে নয়টি প্রাথমিকের মধ্যে এটা ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা জায়গা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকার জনগণের সাথে বসা হয়েছে। আশা করি অচিরেই জায়গার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) আশরাফুল আলম সিরাজী বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। বেশ কয়েকবার আমরা বিভিন্নভাবে এলাকার মানুষদের এই বিষয়ে বুঝিয়েছি। তবে, জায়গার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি বা কেউ দিতে রাজি হননি। তাই বিদ্যালয়টি এখনো সরানো সম্ভব হয়নি। এবিষয়টি নিয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহিদুল আলম বলেন, আমি বিদ্যালয়টি দেখে আসব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।