আজ মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১লা আশ্বিন ১৪৩১
কর্মকর্তা কর্মচারীরা জড়িত থাকার অভিযোগ

হাটহাজারীতে নিলামের নামে হরিলুট হচ্ছে সিভাসুর সম্পদ

মাহমুদ আল আজাদ হাটহাজারী প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১১:১৯:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ বিক্রয় নিলামে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হাটহাজারী কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি এবং স্থানীয়রা ব্যবসায়ীরা এ অভিযোগ তোলেন। তারা জানান, নিলামের বিজ্ঞপ্তি ছাড়া গোপনীয়ভাবে লাখ টাকার গাছ নামেমাত্র মূল্যে (২০ হাজার টাকা) নিলামের নামে কথিত ব্যক্তির কাছে বিক্রয় করে সরকারের কোষাগারকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করেছেন। প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ড.ফজলে বারী এ অনিয়মের সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ তোলেন কাঠ ব্যবসায়ীরা। নিলামের নামে হরিলুট হচ্ছে সিভাসুর সম্পদ

শুক্রবার রাতে সরেজমিনে সিভাসু হাটহাজারী শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় সারি সারি মেহগনি, আকাশমনি গাছের স্তুপ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে হাটহাজারী কাঠ ব্যবসায়ী সমিতিসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী সেখানে অবস্থান করে প্রকাশ্য নিলামের বিপরীতে গোপনীয়ভাবে স্বল্পমূল্য গাছ বিক্রির নিন্দা জানাচ্ছেন। জানতে চাইলে ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা দিতে গিয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. ইব্রাহীম জানান, চলতি মাসে আমরা কাঠ ব্যবসায়ীরা জানতে পারি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় ক্যাম্পাস স্থাপনের (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় রিসার্চ এন্ড ফার্ম বেইজড ক্যাম্পাসে কেটে রাখা কিছু গাছ  বিক্রয়ে নিলাম ডাক হবে। জানার পর থেকেই ব্যবসায়ীরা যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। সর্বশেষ সোলাইমান প্রকাশ মিয়া ও শাহ আলম নামে দুই ব্যবসায়ী ২১ তারিখ যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান রাকিব জানান, খুব শীঘ্রই নিলাম দেয়া হবে। তাদের নাম ও মোবাইল নাম্বার নোট করে নেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার জানতে পারি ২৫ সেপ্টেম্বর নিলামে ডাক হয়ে নামে মাত্র ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে। প্রথমত নিলামে কমপক্ষে ৮৫ হাজার থেকে ১লক্ষ টাকা নিলামে ডাক উঠবে দ্বিতীয়ত প্রকাশ্য নিলাম ডাকের নামে তারা মিথ্যাচার করছে। শুক্রবার সকালে প্রধান ফটকে নিলামের বিজ্ঞপ্তির নোটিশ চোখে পড়ে অথচ এতদিন আমরা দেখিনি। আমাদের সন্দেহ তারা নিলাম ডাককারীর সাথে গোপনীয় চুক্তি করে সরকারি কোষাগারে মাত্র ২০ হাজার দেখিয়েছেন। এ দুর্নীতির নেতৃত্বে আছেন প্রজেক্ট ডাইরেক্টর নিলাম কমিটির আহ্বায়ক ফজলে বারী। উপস্থিত সোলাইমান ও শাহআলম জানান, আমাদের কাছে রাকিব ওই ব্যক্তি নিলামের একটা ধারনাও নিয়েছেন। সেটা দেখানো মূল্যের দ্বিগুন। কিন্তু স্বল্পমূল্যে বিক্রি তা কিভাবে সম্ভব? অবশ্যই সংশ্লিষ্টরা দুর্নীতি করে সরকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

 

সালামত উল্লাহ, ফারুকসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সুষ্ঠ তদন্ত করলে দুর্নীতির সত্যতা বেরিয়ে আসবে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ফজলে বারী মুঠোফোনে বলেন, নিয়মমত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ্য নিলাম ডাক হয়েছে। ঢাকার এক ব্যবসায়ীকে সর্বোচ্চ ডাকে দেয়া হয়েছে। আমরা সবাইকে অবগত করেছি নিলামের আগে। এটা নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। স্থানীয় দুইজন ব্যবসায়ীর নাম জানতে চাইলে মনে পড়ছে না বলে জানান। এদিকে বিজ্ঞপ্তি কোথায় সাঁটানো হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি সঠিক স্থান জানাতে পারেনি। অথচ দেখা গেছে, প্রধান ফটকে বিজ্ঞপ্তি সাঁটানো। প্রশ্ন জাগছে প্রধান ফটকে বিজ্ঞপ্তি কিন্তু কারো নজরেই পড়েনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী জানান, নিলাম আদৌ হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। হলে আমরা অবশ্যই জানতাম।

 

জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম জানান, বিষয়টি শুনেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে  জানিয়ে দেয়া হবে।