আজ শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩রা কার্তিক ১৪৩১
# বাংলাদেশ ব্যাংকের ও ক্ষমতা নেই কোন ধরণের আদেশ দেওয়ার বলে গ্রাহক হুমকি দিয়ে থাকেন ব্যাংক ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন

হাটহাজারী কৃষি ব্যাংকে গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ

মঈন উদ্দিন (মিলন): | প্রকাশের সময় : সোমবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০২:২৪:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

 

 

ব্যাংকের পাওনা আদায় সত্ত্বেও গ্রাহকের স্বত্বের দলিলপত্র আটকিয়ে রাখা সহ গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে । এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সহ কৃষি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও দুদক কার্যালয়ে আইনী প্রতিকার চেয়েছে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্‌ ফাউন্ডেশন - বিএইচআরএফ । সংগঠনের নিকট গ্রাহক হয়রানীর বিষয়ে কৃষি বাংকের নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কৃষি ব্যাংকের একজন গ্রাহক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহীম (৫২) দৈনিক সাঙ্গুকে বলেন, তার মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাজা মিয়া স্টোরের নামে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের হাটহাজারী শাখায় একটি সিসি অ্যাকাউন্ট (হিসাব নাম্বার: ২৯১৯-০১৩৪০০০৪২৩, মেসার্স রাজা মিয়া স্টোর) খুলেছিলেন। এর ভিত্তিতে উক্ত ব্যাংক থেকে মোহাম্মদ ইব্রাহীম একটি সিসি লোন নেন। তারই প্রেক্ষিতে তিনি ব্যাংক থেকে ১৬.০৬.২০২২ তারিখ চিঠি পাবার পর চিঠিতে দাবীকৃত ২১,৫০,০০০/- (একুশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা শাখা ম্যানেজারের সাথে আলাপ আলোচনা করে, ব্যাংকিং নিয়ম এবং চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকের নিয়মের প্রতি সম্মান রেখে ইতোমধ্যে গত ১৭.০৭.২০২২ তারিখে যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করেন। যার পরিমাণ ২১,৪৪,৭৪৬ টাকা (অংকে-একুশ লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার সাতশত ছেচল্লিশ টাকা মাত্র)। যার বিপরীতে ডেবিটঃ নগদ নং ঘ ৭০৩২৫৮৪ এ সি এফ/ ১৫ নগদ গ্রহণের রশিদ প্রদান করা হয় । অভিযোগে আরো উল্লেখ্য , টাকা জমা প্রদানের দিন,ঐ সময় ঘটনাচক্রে ব্যাংকের জিএম শফিউল আজমও উপস্থিত ছিলেন । পরিশোধের পর সাথে সাথে প্রদত্ত ব্যাংক স্টেটমেন্টে টাকার অংকে (০০) শুণ্য প্রদর্শিত হিসাব বিবরণী ম্যানেজারের স্বাক্ষরে মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে একটি কপি প্রদান করে। অর্থাৎ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক হাটহাজারী শাখা তার কাছ থেকে আর কোন পাওনা নাইও ছিল না। যার প্রেক্ষিতে একই তারিখে তার প্রাপ্য সার্বিক ডকুমেন্টস যেমন এনওসি, ভূমির মূল দলিলপত্র এবং জামানতের চেক ও চার্জ ডকুমেন্ট সহ অন্যান্য ডকুমেন্টস ফেরতের নিয়ম থাকলেও, লকার থেকে আনা হয়নি । আজ কাল দেব দিচ্ছি মর্মে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক হাটহাজারী শাখার ম্যানেজার ও এসপিও মোঃ দেলোয়ার হোসেন মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে দিনের পর দিন ঘুরাইতে থাকেন। ব্যাংক ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেনের কথার প্রতি আস্থা রেখে মোহাম্মদ ইব্রাহীম টানা আট কর্মদিবস ব্যাংকে গেলেও, ব্যাংক ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন তাকে কোন ডকুমেন্টস না দিয়েই বারবার ফিরিয়ে দেয়। পরে তিনি এসব ডকুমেন্টস ফিরে পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযাগিতা চেয়ে ২৮.০৭.২০২২ তারিখে একটি আবেদন করেন । এরপর যখন মোহাম্মদ ইব্রাহীমের ছেলে আবার উক্ত কৃষি ব্যাংকে যায়, তখন বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করার বিষয়টি নিয়ে তার ছেলেকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন । এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত ম্যানেজারকে কোন ধরণের আদেশ দিতে পারবে না এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ঐ ক্ষমতা নেই বলেও হুমকি দিয়ে কথা বলেন। নিজেকে খুব ক্ষমতাধর বলে নানাভাবে হাঁকা বকা করেন, প্রমাণ করতে চান তিনি অনেক ক্ষমতা রাখেন । অনুসন্ধনে আর উঠে আসে গত ০৪.০৮.২০২২ তারিখে উক্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক হাটহাজারী শাখা থেকে মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে একটি চিঠি দেয়। সকল পাওনা পরিশোধের পরও আমার কাছ থেকে আরো হঠাৎ করে ১১,৬০,১৩৪ টাকা (এগারো লাখ ষাট হাজার একশো চৌত্রিশ) টাকা অন্যায়ভাবে দাবী করা হয় যার কোন হিসেব কয়েকমাস পরে তাদের দেয়া পরবর্তী ব্যাংক স্টেটমেন্টেও ছিলো না। এর থেকেই বুঝা যায় যে, দায়িত্বরত উক্ত ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন মোহাম্মদ ইব্রাহীমের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা দাবি করছে। যা একটি বড় ধরণের চাঁদাবাজি, প্রতারণা, দুর্নীতি ,জ্বাল- জালিয়াতি এবং মারাত্মক অনিয়মও ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয় । এমনকি তিনি তার ডকুমেন্টসগুলোর জন্য বারংবার গেলেও ফেরত দিচ্ছেন না। যার ফলে তাকে চরম ভোগান্তির মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে কৃষি ব্যাংক হাটহাজারী শাখার ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক সাঙ্গুকে জানান, এটা তেমন কোন ঘটনা না, সামান্য ভুলবোঝাবোঝি ইব্রাহীম মিথ্যা,বানায়াট কথা বলছে, তদ্যন্ত চলছে,তদ্যন্ত শেষে সব জানতে পারবেন। এদিকে, এসব দুঃচিন্তায় মোহাম্মদ ইব্রাহীম মানসিকভাবে দিন দিন ভেঙ্গে পড়েছেন, শারীরিকভাবেও অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন । করোনায় তার ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস হওয়ার পরও তিনি ধার কর্জে, ব্যাংকের সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করেন । বর্তমানে তিনি নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে পড়েছেন । সমস্ত বকেয়া পাওয়া পরিশোধ এবং (০০) শুণ্য হিসাব বিবরণী প্রদানের পরও তার মূল দলিল পত্র জামানতের চেক ইত্যাদি বেআইনীভাবে নিজ হেফাজতে আটকিয়ে রেখে তার নিকট হতে ১১,৬০,১৩৪ (এগারো লাখ ষাট হাজার একশো চৌত্রিশ টাকা) টাকা অন্যায়ভাবে চাঁদা দাবী করা হয়েছে । যা মারাত্মক জুলুম ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছাড়া আর কিছুই নয়।