আজ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০

সোনার ধানে ভরে উঠছে কৃষকের গোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২৬ নভেম্বর ২০২১ ১২:২৯:০০ অপরাহ্ন | চট্টমেট্টো

বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত গুমাই বিল। রাঙ্গুনিয়ায় প্রায় তিন হাজার হেক্টর আয়তনের এই বিলে এক মৌসুমে উৎপাদিত ধান দিয়ে সারা দেশের আড়াই দিনের খাদ্যের চাহিদা মেটানো যায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ২৫৬ হেক্টর জমিতে। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৫ হাজার ৩২২ হেক্টরে চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।

গুমাই বিলে চাষাবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৬ হেক্টর জমিতে। উফশী ধানের চাষাবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ১০ হেক্টরে। এছাড়া হাইব্রিড ৯০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ধান ২২৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩.৭৬ মেট্রিক টন।

এদিকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে গুমাই বিলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে দল বেঁধে ধান কাটছেন কৃষকেরা। পরিশ্রমের ফসল তোলা হচ্ছে ঘরে। এরপর চলছে মাড়াইয়ের কাজ।

উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার একাংশজুড়ে চলছে এ উৎসব। কৃষকদের বিশ্রামের সময় নেই। চোখে-মুখে তৃপ্তির হাসি। এলাকার কৃষক পরিবারের পুরুষ সদস্যরা ভোরেই চলে আসেন বিলে। তাদের সঙ্গে আছে মজুরের দল।  

ধান কাটার এ মৌসুমে নেত্রকোনা, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, রংপুর, সাতকানিয়া, বাঁশখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকেরা এখানে এসে জড়ো হন। দৈনিক দুই বেলা খাবার এবং নির্ধারণ করা মজুরিতে গুমাই বিলে ধান কাটেন তারা।

ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে ধান কাটা। এরপর কাঁধে করে বাড়ির উঠানে বয়ে আনেন ধান। সেখানে চলে মাড়াইয়ের কাজ। এভাবে সোনার ধানে ভরে উঠছে কৃষকের গোলা। তবে ধান কাটা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি এবার বেড়েছে।

রাঙ্গুনিয়ার রোয়াজারহাট, গোচরা, শান্তিরহাট, রানিরহাটে, পদুয়া, রাজারহাট বাজারে শ্রমিকরা  ধান কাটার জন্য মজুরি নিয়ে দরদাম করছেন। লালানগর এলাকার জমির মালিক খলিল ভান্ডারী বলেন, শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি ৬৫০ টাকা দাবি করছে।  

দৈনিক মজুরির পাশাপাশি অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচও দিতে হয় বলে জানা গেছে। সবকিছু মিলিয়ে একজন শ্রমিকের পেছনে দৈনিক ৯০০ টাকার বেশি খরচ হয়। নেত্রকোণার শ্রমিক সাজিদ আলী বলেন, পেটের দায়ে অনেক দূর থেকে কাজ করতে এসেছি। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করি। দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি পাই। এতে পোষায় না।  

রাঙ্গুনিয়ার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আকতার বলেন, আমন ও পাইজাম জাতের ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ব্রি-৪৯, ৫৮, ৮৭ জাতের ধান চাষ করেছিল কৃষকরা। এখন ব্রি-৪৯ এবং ব্রি-৮৭ ধান কাটা চলছে।  

 

 

 



সবচেয়ে জনপ্রিয়