যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে ৩শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাঝসাগরে আটকা পড়ে পর্যটকবাহী জাহাজ এলসিটি কাজল।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ফেরার পথে সাগরের এ ঘটনা ঘটে।
প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর ত্রুটিপূর্ণ জাহাজটি কিছুটা সমাধান করে কোনমতে টেকনাফ স্থলবন্দরে ভিড়ে।
টেকনাফ স্থল বন্দরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ৮টার পরে এলসিটি কাজল ঘাটে পৌঁছে। এসময় অধিকাংশ যাত্রীর চোখেমুখে ক্লান্তি ও ক্ষোভের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএর (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ) ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ডুবোচরের কাছাকাছি পর্যটকবাহী জাহাজটি আটকে যায়। জাহাজে ৩০০ জনের মতো যাত্রী ছিল। তিন ঘণ্টা মতো চেষ্টা চালিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটির সমাধান করে জাহাজটি টেকনাফ জেটিঘাটে ফিরেছে।
জাহাজে থাকা এক যাত্রী জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রার কিছুক্ষণ পরে তাদের বহনকারী জাহাজটি সাগরের মাঝে আটকে যায়। ইঞ্জিন থেকে কালো ধোয়া ও বিকট শব্দ বের হয়। এ সময় প্রায় যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। অনেকে কান্নাকাটি করতে থাকে। ঘটনাস্থল থেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকাবাসীকে ফোন করে।
তাদের অভিযোগ, প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে জাহাজে থাকা যাত্রী ও শিশুরা ক্ষুধার্ত হলেও মালিক কর্তৃপক্ষ তাদের কোন খোঁজখবর নেয়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে এলসিটি কাজল যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আটকে গিয়েছিল। সমস্যা সমাধানের পরে যাত্রীদের নিয়ে জাহাজটি নিরাপদে কোলে ফিরেছে। এতে বড় ধরণের দুর্ঘটনা হয়নি। তবু বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এলসিটি কাজল প্রায় ৪০ বছর পূর্বের পুরনো একটি জাহাজ। যেটি টেকনাফ সেন্টমার্টিনের মতো গভীর সমুদ্রপথে চলাচলের উপযুক্ততা হারিয়েছে অনেক আগে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে জাহাজটি কেন চলাচল করছে তা কারো বোধগম্য নয়।
পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপত্তার স্বার্থে এসব ঝুঁকিপূর্ণ জাহাজ সাগরে চলাচল নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।