আজ সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সেতু নির্মাণে বাড়তি যানবাহনের প্রস্তাব, তেল-গ্যাসেই ব্যয় ১১ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : সোমবার ৬ জুন ২০২২ ১১:৫৭:০০ পূর্বাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

দেশব্যাপী ১৩ হাজার কালভার্ট-সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ১২টিসহ বাড়তি ২৭টি যানবাহনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব যানবাহন সচল রাখতে ১১ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার তেল, গ্যাস ও লুব্রিকেট প্রয়োজন হবে। দুই বছরের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এমন প্রস্তাবনায় ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এটাসহ গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ২৭টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেল সচল রাখার স্বার্থে জ্বালানি ও সংরক্ষণ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মূল প্রকল্পে ১৫টি যানবাহন (জিপ ১১টি, পিকআপ দুটি এবং মাইক্রোবাস দুটি) ও ৫০০টি মোটরসাইকেলের জ্বালানি ব্যয়ের সংস্থান রাখা ছিল।

বাড়তি ১২টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেলের প্রাপ্তি, পরিচালনা ব্যয় সুস্পষ্টভাবে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত প্রকল্পে সাব-সয়েল ইনভেস্টিগেশন খাতে ২০ কোটি ৭২ লাখ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, এ সম্পর্কে ডিপিপিতে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

প্রকল্পে বাড়তি গাড়ি ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া জ্বালানি খরচ ১১ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের বলেছি, এটা যুক্তিসঙ্গত করতে। ১৫ মিটারের জায়গায় ২০ মিটার কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল। এটা আমরা না করে দিয়েছি। এছাড়া টাকা সাশ্রয়ের জন্য সেমিনার বাদ দিতে বলা হয়েছে প্রকল্পের আওতায়। বিষয়গুলো যুক্তিসঙ্গত করে নিয়ে এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

এ প্রসঙ্গে ‘১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন করে প্রকল্পের আওতায় ২৭টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেল সচল রাখতে ১১ কোটি ৯ লাখ টাকার জ্বালানি খরচ চেয়েছি।

আগামী দুই বছরের জন্য এই ব্যয় চাওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছি। যদি আমাদের আবেদন মঞ্জুর হয় তবে দুই বছরের জন্যই এটা হবে।

প্রকল্পের কিছু বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন ব্যাখ্যা চেয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, যদি কমিশন ব্যাখ্যা চায় তবে আমরা ব্যাখ্যা দেবো।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে সেতু/কালভার্টের উভয় পাশে অ্যাপ্রোচের মাটি যথাস্থানে ধরে রাখার প্রয়োজনে ১৫ মিটার করে মোট ৩০ মিটার এইচবিবি গাইডওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, সিসি ব্লক-প্লেট নির্মাণে সংস্থান রাখা হয়েছে। কিন্তু কী পরিমাণ এইচবিবি গাইডওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, সিসি ব্লক-প্লেট নির্মাণ করা হবে, ব্যয় কত হবে এ বিষয়ে কোনো তথ্য সংযুক্ত করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর এ বিষয়ে সভায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে পারে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে মূল ব্যয় ছিল ৬ হাজার ৫৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ৬১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৪০ কোটি টাকা। মূল প্রকল্পটি ০১ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ৩০ জুন ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা। এখন প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধি করে ৩০ জুন ২০২৪ সাল নাগাদ প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলা, সিটি কেেরারেশন ও পৌরসভায় বাস্তবায়িত হবে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নিয়ে সম্প্রতি কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খানের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা হয়। সভায় কমিশন কিছু মতামত তুলে ধরেছে।