আজ সীতাকুণ্ড পৌরসভা হল রুমে শিবচতুর্দশী মেলা কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মেলা কমিটির উপদেষ্টা দুলাল বিশ্বাস এবং সঞ্চালনা করেন কমিটির সেক্রেটারি বাবুল শর্মা। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পলাশ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক অলোক ভট্টাচার্য এবং সদস্য জিতেন্দ্র নারায়ণ নাটু ও সমীর শর্মা।
সভায় উপস্থিত সকলের সম্মতিক্রমে ২০২৫ সালের শিবচতুর্দশী মেলা উপলক্ষে একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে মনোজ কুমার নাথকে সাধারণ সম্পাদক, বাবুল বাহাদুর শাস্ত্রীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পাপন কৃষ্ণকে অর্থ সম্পাদক এবং সজন মল্লিককে সহ-অর্থ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
সভায় সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক ডাঃ কমল কদর তার বক্তব্যে বলেন, “শিবচতুর্দশী মেলা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় কার্যক্রম নয়, বরং ধর্মীয় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। আমরা সকলে মিলিত হয়ে এই মেলাকে নির্বিঘ্ন ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে চাই।”
উপজেলার বিএনপির সদস্য সচিব কাজি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, “এই মেলা কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নয়, বরং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। মেলার সুষ্ঠু আয়োজনে আমাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ইউসুফ নিজামী তার বক্তব্যে বলেন, “শিবচতুর্দশী মেলা সনাতন ধর্মীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ মেলা শুধু একটি আচার নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ। আমরা চাই, সকল ধর্মাবলম্বী মানুষের সহযোগিতায় এটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক।” সীতাকুণ্ড উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল মুনসুর বলেন, “শিবচতুর্দশী মেলা সনাতন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আচার। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য স্থাপন করা। এই মেলার মাধ্যমে আমাদের সেই সম্প্রীতির ঐতিহ্য আরও শক্তিশালী হবে। আমি সকলকে এই মহতী কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।”
সীতাকুণ্ড পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, “শিবচতুর্দশী মেলা আমাদের ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য নয়, বরং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। আমরা সবাই মিলে এই মেলাকে সুষ্ঠু ও সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করব।” সীতাকুণ্ড পৌরসভা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও অতিরিক্ত জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট মোহাম্মদ সরোয়ার হোসাইন লাভলু বলেন, “আমরা ধর্মীয় সহাবস্থানের ধারক। শিবচতুর্দশী মেলার মতো একটি বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমাদের সমাজের সকল স্তরের মানুষ একত্রিত হয়। এটি আমাদের ঐতিহ্য এবং সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক। ”বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইকরাম হোসেন রানা বলেন, “এই মেলা আমাদের সনাতন ধর্মীয় ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তরুণ প্রজন্মকে এই মেলার ধর্মীয় গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব।”
সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল মুনসুর, সোনাইছড়ি বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি মোহাম্মদ রবিউল হোসেন, ৬ নং বাঁশবাড়িয়া বিএনপির সভাপতি সালামত উল্লাহ, সেক্রেটারি ইদ্রিস মেম্বার, এবং ২ নং বিএনপির সভাপতি জাফর ভূঁইয়া ও সেক্রেটারি আলাউদ্দিন মাসুমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক রতন কুমার নাথ, সদস্য সচিব গোপাল শর্মা; পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা সুনন্দ্য ভট্টাচার্য সাগর, কাকন দাশ, বজন দাশ, পাপন দাশ, ঝুলন চৌধুরী, ডাঃ দুলনসহ সীতাকুণ্ড উপজেলা ও পৌরসভার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আরো উপস্থিত সকলেই ২০২৫ সালের শিবচতুর্দশী মেলা নির্বিঘ্ন এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ মেলার ধর্মীয় তাৎপর্যকে গুরুত্ব দিয়ে এর সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।