রাত এগারোটায় সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডস্থ এসকেএম জুটমিল এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত স্বদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রির কারখানা থেকে পণ্য খালাস করে ফিরছিলেন ২২ চাকার একটি লরী। এসময় হঠাৎ করে রেলক্রসিংয়ে গাড়িটির চাকা আটকে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা করেও রেললাইন থেকে সরানো যায়নি লরীটিকে। রাত সাড়ে এগারোটায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে তূর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আপ লাইন ধরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছুটে ছলছে। গেটম্যান মতিয়ার প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে থাকতেই ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে লাল পতাকা উড়াতে থাকে। কিন্তুু ট্রেনের চালক এসকেএম জুটমিলের ওই রেলক্রসিং এলাকার একেবারে কাছাকাছি আসার পরেই রেললাইনে লরী আটকে পড়ার ঘটনা আঁচ করতে পারেন। ততক্ষণে নিয়ন্ত্রণ করা ছিল দুঃসাধ্য। তীব্রভাবে লরীটিকে ধাক্কায় দিয়ে আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে থামে তূর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস। দুমড়েমুচড়ে ডাউন লাইনে গিয়ে পড়ে লরীটি। এতে চট্টগ্রাম-ঢাকা রেললাইনটির স্লিপার বেঁকে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। দূর্ঘটনার আগেই গাড়িটির চালক, সহকারী ও আশেপাশের সকলে সরে পড়ে। এ ঘটনায় রাত সাড়ে এগারোটার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম লেনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও চট্টগ্রাম-ঢাকা লেনে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। রেলের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে এসকেএম রেলক্রসিং এর গেটম্যান মতিউর রহমান বলেন, স্বদেশ ক্যামিকেলের লরীটা হঠাৎ করে লাইনে আটকে যায়। এতেই বাঁধে বিপত্তি। দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও লাইন থেকে সরানো যায়নি গাড়িটি। অন্যদিকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস ট্রেন এসে পড়লে লাল পতাকা দেখাতে থাকি। সম্ভবত ট্রেনের চালক ঘুমিয়ে পড়েছে নয়তো খেয়াল করেনি। লরীটিকে ধাক্কা দিয়ে দূরে গিয়ে থামে। এতে লরীটি ডাউন লাইনের উপর গিয়ে পড়ে। ট্রেনটির ইঞ্জিন অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেলক্রসিংয়ের অন্য গেটম্যান মাহফুজ বলেন, লরীটি উল্টে পড়ায় চট্টগ্রামমুখী লেনে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ। সেটি সরালে এবং রেললাইন মেরামত করার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে। সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে তারা আসছেন। স্থানীয়রা এ প্রতিবেদককে জানান, রেললাইনের পূর্ব পাশে অবস্থিত স্বদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রি লিঃ এর দৈনিক ১০০ টিরও বেশি গাড়ি এ রেলক্রসিং দিয়ে পার হয়। কিন্তুু এতগুলো বড় বড় গাড়ি ক্রস করার মতো জায়গা এটি নয়। রেলক্রসিংটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্বদেশের পণ্যের গাড়িগুলো নিয়ম না মেনেই অহরহ পার হচ্ছে। রেলক্রসিং এর নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন। দিনের বেলা হলে এটি হতাহতের ঘটনায় রূপ নিত। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, স্বদেশের মালামালের গাড়ি ট্রেন আসার ২ মিনিট আগেও পার হয়। কোন নিয়ম শৃঙ্খলা তারা মানেনা। সবচেয়ে বেশি গাড়ি এ কোম্পানির। রাস্তার অবস্থাতো খারাপ হয়েছেই, পারাপারেও বড় ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।