হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ড্রাইভার পদে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন র্যাব-৭। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) হাটহাজারী পৌরসভাস্থ পশ্চিম দেওয়ান বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর পাশে একটি দোকান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম মোহাম্মদ সোহেল আলম (৩৬)। সে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া সিকদার পাড়ার মৃত ফয়েজ আহমদ এর পুত্র।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, প্রতারক মোহাম্মদ সোহেল আলম হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুক্তভোগী মিঠুন চক্রবর্তী নামে এক গাড়ী ড্রাইভারকে ড্রাইভার পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোঃ জসীম উদ্দিন নামে আরেক প্রতারকের সাথে মিঠুন চক্রবর্তীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপর প্রতারকদ্বয় মিঠুন চক্রবর্তীকে স্থায়ীভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে বলে প্রলোভন দেখিয়ে ৬ লক্ষ টাকা দাবি করলে প্রতারকদ্বয়ের মিথ্যা কথার ফাঁদে পরে গত ১৫ জুলাই ২০২২খ্রিঃ তারিখ মিঠুন তার স্ত্রী এবং স্ত্রীর বড় ভাই রঞ্জিত চক্রবর্তী উপস্থিতিতে প্রতারকদ্বয়কে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে। এর কয়েক দিন পর প্রতারক মোহাম্মদ সোহেল আলম বাকি টাকা দ্রুত পরিশোধ করার জন্য তার সহযোগাী মোঃ জসীম উদ্দিন তাকে চাপ দেওয়ার কথা বলে মিঠুন চক্রবর্তী থেকে দ্বিতীয় ধাপে আরো ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আদায় করে। দুই ধাপে সর্বমোট ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর প্রতারক চক্রটি মিঠুন চক্রবর্তীকে একটি নিয়োগপত্র প্রদান করে। নিয়োগপত্রটি হাতে পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করে মিঠুন চক্রবর্তী জানতে পারে এটা একটা ভুয়া নিয়োগপত্র। এরপর এই বিষয় নিয়ে প্রতারক চক্রের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিভিন্ন ধরণের তাল-বাহানা ও হুমকি ধামকি প্রদান করে। সে সত্বেও মিঠুন চক্রবর্ত্তী প্রতারক মোহাম্মদ সোহেল আলম এর নিকট কান্নাকাটি করলে সে ১ লক্ষ টাকা ফেরত দেয় এবং বাকি টাকা পরে দিবে বলে আশ্বস্ত করে। এর কয়েকদিন পর ভুক্তভোগী আবারো প্রতারক মোহাম্মদ সোহেল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তখন সে জানায় তার কাছে কোন টাকা নেই সকল টাকা তার অপর সহযোগী মোঃ জসীম উদ্দিন কে দিয়ে দিয়েছে। এরপর টাকার জন্য খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায় দুই প্রতারকেরই মোবাইল ফোন বন্ধ। বিষয়টি হাটহাজারী বাজার সমিতি কে অবহিত করলে তারাও স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী মিঠুন চক্রবর্ত্তী র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর উল্লেখিত প্রতারনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করে। ভুক্তভোগীর আবেদনের বিষয়টি মানবিকতার সহিত আমলে নিয়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম উল্লেখিত ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭ উক্ত প্রতারক চক্রের মূল হোতা মোহাম্মদ সোহেল আলমকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উল্লেখিত প্রতারনার কথা অকপটে স্বীকার করে। এছাড়াও ধৃত আসামী আরো জানায় সে এবং তার অপর সহযোগী মোঃ জসীম উদ্দিন পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘ দিন যাবৎ সাধারণ মানুষ’কে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে সরকারী বিভিন্ন সংস্থায় বিভিন্ন পদে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে আসছে।
এ বিষয়ে র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।