চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চল( দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন) সাগরের চারপাশের সন্দ্বীপ উপজেলার ৩ লক্ষ ২৮ হাজার মানুষের বসবাস। এ
উপজেলার চারদিকে নদী বেষ্টিত। মেঘনাপাড়ের মেঘনাবিধৌত হলেও রূপ-রস-সৌন্দর্যে অনন্য এ উপকূলীয় অঞ্চল। সাম্প্রতিক সময়ে নদীর তীরে ব্লক দিয়ে বাঁধায় করা তীর রক্ষা বাঁধ মগধরা সারিকাইত রহমতপুর উপকূল বেড়িবাঁধ কে করে তুলেছে অপরূপা। ফলে উপজেলার এ তিনটি ইউনিয়নের পুরো উপকূল হয়ে উঠছে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র। এতে করে এ উপকূল ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। মেঘনার করাল গ্রাসের ভাঙ্গন থেকে রক্ষা হয়ে ২০১৪ সালে ভাঙ্গন বন্ধ হয়ে এ অঞ্চলে রয়েছে অনেক জেগে ওঠা চর, ঢেউ আর বেলাভূমির মিতালী। রয়েছে ইলিশের দীর্ঘতম অভয়াশ্রম। মেঘনার বুকে চিড়ে পণ্যবাহী সারি-সারি মাছের বোট , মাছ শিকারি, নৌকার দোলা আর আর বিভিন্ন বাল্বহেড। নদীর চরে চড়ছে গরু-মহিষ, ছাগল , ভেড়া। তাদের সঙ্গে রাখালের বন্ধুত্ব। রয়েছে বিভিন্ন সবজি ডাল ধানসহ ফসলের বিস্তীর্ণ মাঠ। উপকূলজুড়ে এ সৌন্দর্যের লীলাভূমি তাই অনায়াসেই হয়ে উঠতে পারে পর্যটন স্পট। ব্লক বেড়িবাঁধ হওয়ার পর থেকে দ্বীপের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে পরিবার সহ ঘুড়তে আসে অনরকে তাদের মতে, একটু ঘঁষে-মেজে ও সরকারি উদ্যোগেই সম্ভব এ উপকূলকে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা।১৪ সালে ভাঙন বন্ধ হওয়ার পর থেকে ১৬ সাল থেকে রহমতপুর বীজ নামক পর্যটন গড়ে তোলার চেষ্টা করে বিভিন্ন ব্যক্তি উদ্যেগে, ইতিমধ্যে রহমতপুর ব্লক বেড়িবাঁধের নিচে বেসরকারি উদ্যেগে নানান জন মানুষ কে আনন্দ দেয়ার জন্য বিভিন্ন স্পটে দোকান নাগড় দোলা, ছোটদের বিভিন্ন রকমের খেলা ইত্যাদি ঘড়ে তুলছেন যা পশ্চিম সাগর পাড় মানুষের আনন্দ বিনোদনের স্পট হিসাবে ঘরে উঠেছে, রাতের বেলায় লাইট সোন্দর্য মানুষকে আরো আকর্ষন করে তুলছে।
ফলে ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে এটি অন্যতম বিনোদন স্পট। প্রায় সারাবছরই এখানে দ্বীপের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনভোজন ছাড়াও সাধারণ মানুষের আনাগোনো থাকে। এছাড়াও সারিকাইত বাংলা বাজার দ্বীপের প্রধান মাছ ঘাট এটি সর্ববৃহৎ মাছ ঘাটগুলোর অন্যতম। এখানে রয়েছে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সমারোহ। প্রতিদিন অন্তত বিশ লক্ষ টাকার ইলিশ কেনা-বেচা হয় এ ঘাটে।
২০১৯ সালে ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সন্দ্বীপের চারপাশে এলাকায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেন বর্তমান সরকার। বর্তমানে এ বাঁধকে ঘিরে উপকুলের অন্যতম পর্যটন স্পট হিসেবে রূপ নিয়েছে। জোয়ার-ভাটার খেলা চলে নিত্য। মেঘনার উঁচু ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জেলেরা শিকার করেন রুপা।
অপার সম্ভাবনাময়ী নদী আর প্রকৃতি সন্দ্বীপের সর্ব দক্ষিণে ও পশ্চিমে মেঘনা উপকুলে ‚লকে করে তুলেছে অপরূপা। ফলে দিন দিন এ উপজেলার পুরো উপকুল হয়ে উঠছে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের মনের খোরাক। এতে উপকুল ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। প্রকৃতি প্রেমীদের মতে, মেঘনার তীর রক্ষার বাঁধকে ঘিরে পর্যটন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। হাজারো প্রকৃতিপ্রেমীকে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি এখানে সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বিকল্প কর্মসংস্থানের। তবে এখনো গড়ে উঠেনি হোটেল-মোটেল, পানি নিষ্কাশন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সচেতন মহল মনে করছেন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণে বদলে যেতে পারে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা। বিশেষ করে দক্ষিণ ব্লক মগধরা অংশে যে কোন পর্যটক আসলে দেখতে পাবে সূর্য উদয় ও অস্ত যাওয়া। কেউ আসলে মুগ্ধতা ছড়াবে। বর্তমানে দক্ষিণ অঞ্চলের ব্লকে সুন্দর্য ছড়াতে উপজেলা বন বিভাগ রোপন করছে৩০০ হেক্টরে - ১৩ লক্ষ ( মেনগ্রোব) বাইন, কেউড়া, গেওয়া ১২ কিমি সীডলিং (সারিকাইত - মগধরা) - স্টিব বাগান
১২ হাজার (ঝাও, বাবলা, খইয়া বাবলা, আকশমনি, আমলকি হরিতকি, বয়রা, শিমুল)
০৮ কিমি সীডলিং - ( সন্তোষপুর) একই রকম স্টিব বাগান। মোট ২০ কিমি সীডলিং ( সন্তোষপুর) - গোলপাতা ২০ হাজার এ গাছের সুন্দর্য মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে উপকুল জুড়ে।
সন্দ্বীপ উপজেলা বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন বলেন এ গাছ রোপণ করা থেকে ছয় মাস পর্যন্ত আমরা সার্বক্ষনিক পাহারায় রেখেছি যাতে করে গাছ গরু ছাগল নষ্ট না করতে পারে। এখনো আমরা গাছের তদারকি করি নিয়মিত।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি, এসব অঞ্চলে এখনো আমার যাওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এটিকে আরো সৌন্দর্য করতে উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।