বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলা, চিকিৎসা সেবা বলতে এখানে ( বেসরকারি ভাবে সাম্প্রতিক গত ১০ বছরের মধ্যে কিছু ল্যাব ক্লিনিক হাসপাতাল কিছুটা ভরসা) তেমন কোন উন্নত স্বাস্থ্য সেবা নেই। জরুরি প্রয়েজনে বড় কোন সিজারিয়ান অপারেশন বা ভারি এক্সিডেন্ট রোগীকে চট্টগ্রাম পাঠাতে হলে জেলা পরিষদের ইজারাদারের লাল বোট, কাঠের বোট অথবা স্পিড বোটই একমাত্র ভরসা , আর রাতের বেলা হলে বেশি ভাগ রোগী আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কোন উপায় নেই।
এ অবস্থায় সি ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সন্দ্বীপে কুমিরা গুপ্তছড়া ঘাটে রোগী পাড়াপাড়ের জন্য একটি সি অ্যাম্বুলেন্স দেয়। চালক ও জ্বালানির অভাবে ৩ বছর পড়ে থাকে এটি উপরের আ্যস্বুলেন্স টি, যার ব্যায় তৎকালীন মুল্য ৩০ লক্ষ টাকা। সন্দ্বীপের সাধারণ জনগণের কোন রকম কাজে আসে নি আ্যাম্বুলেন্সটি ৩ বছর অচল থাকার পর ২০১১ সালে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে অস্থায়ীভাবে একজন চালক ও জ্বালানি তেলের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় এক বছর চলার পর বন্ধ হয়ে যায় ঐ অ্যাম্বুলেন্স টি । এরপর আর চালু হয়নি। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সি অ্যাম্বুলেন্সকে ঘাট থেকে মালেক মুন্সির বাজার ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের পিছনে এখন এখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এত ব্যায় বহুল অ্যাম্বুলেন্স টি বর্তমানে লতা পাতা দিয়ে ঘেড়া বিভিন্ন রকম পোকা মাকর বর্তমান কছু গাছের সাথে বাসা বেধে আছে।
২০১৫ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের থেকে আরেকটি সি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। যার মুল্য ছিল ৮০ লক্ষ টাকা, সেটি ও গুপ্তছড়া ঘাটের নদী থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে কেউরা বনে ডাঙায় অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে, জরুরি প্রয়েজনে বা সরকারি কাজে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড্রাইভার ভাড়া করে চালান। কিন্তু আগেরটির মতো এটারও চালক ও জ্বালানি তেলের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ফলে রোগীদের জন্য সি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও এক দিনের জন্যও সেটি ব্যবহার করা যায়নি।
সন্দ্বীপ উপজেলার সদ্য সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল করিম বলেন ২০০৮ সালে সন্দ্বীপের জন্য একটা সি অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ দেয়া হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। আমি ২০১৩ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়িত্বে আসার পর কয়েকবার মেরামত করে এটি চালানোর উদ্যোগ নিলেও সফল হয়নি । মেরামতের পরদিনই এটি অদৃশ্য কারণে আবার নষ্ট হয় যায়। এছাড়া সি অ্যাম্বুলেন্সটি এই নৌ-রুটের উপযোগী নয়। এটি হাওর এলাকার জন্য উপযুক্ত।
সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার মানস বিশ্বাস বলেন এসব অ্যাম্বুলেন্স ও ক্রয় সামগ্রী সবই অনেক আগের কেনা। আমি দায়িত্ব নেয়া থেকে সন্দ্বীপের টোটাল স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোড় গোড়ায় পোঁছে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জরুরি রোগী পাড়াপাড়ের জন্য নতুন করে ক্রয় সামগ্রী কিনার জন্য সিভিল সার্জন সহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরে কথা বলবো।