আজ মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১লা আশ্বিন ১৪৩১
দুই মাসে ৩২টি হত্যাকাণ্ড

সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প

ইমাম খাইর, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৭ জুলাই ২০২৩ ০৫:৩৩:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

 

 সশস্ত্র গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব 

 আইন শৃঙ্খলার অবনতি

 

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে প্রায় প্রতিয়ত খুন-খারাবি, অপহরণের ঘটনা ঘটে চলছে। খুন হচ্ছে মাঝিমাল্লা। আধিপত্য বিস্তার ও অন্তঃকোন্দলে অশান্ত হয়ে ওঠেছে আশ্রয়শিবিরগুলো। থেমে নেই চোরাচালান, অস্ত্র ও মাদক বাণিজ্য। আরসা ও আরএসও নামে দুটি বিবদমান গ্রুপের কাছে জিম্মি সাধারণ লোকজন। রোহিঙ্গাদের অপকর্মের প্রভাব পড়ছে আশপাশের এলাকায়। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে শুক্রবার (৭ জুলাই) ভোরে উখিয়ার ক্যাম্প-৮ ওয়েস্টে দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে ৫জন নিহত হয়েছেন।  নিহতরা হলেন, ক্যাম্প-৮ ডাব্লিউ এর এইচ-৪৯ ব্লকের আনোয়ার হোসেন (২৪), এ-২১ ব্লকের মোহাম্মদ হামীম (১৬), ক্যাম্প-১০ এর এইচ-৪২ ব্লকের নজিবুল্লাহ, ক্যাম্প-৩ এর বি-১৭ ব্লকের নুর আমিন ও অপরজনের পরিচয় তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি। নিহতরা আরসা সদস্য বলে জানিয়েছেন ৮ -এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ।

তিনি বলেন, ৭ জুলাই ভোর ৫টার সময় এফডিএমএন ক্যাম্প—০৮/ইস্ট এর বি/১৫, বি/১৬ ও বি/১৭ ব্লক এলাকায় দুস্কৃতিকারী সংগঠন আরসা এবং আরএসও সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে ৩ আরসা সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। আরো ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদেরকে উখিয়াস্থ আইওএম হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ সংক্রান্তে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। ক্যাম্প এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ।তিনি বলেন, ক্যাম্পে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বাড়ছে খুনোখুনি। এরই মধ্য ভোরে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে শুক্রবার গোলাগুলি ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে নিহতরা সবাই আরসার সদস্য।তিনি বলেন, কে আরসা, কে আরএসও– সেটি বিষয় নয়। ক্যাম্পে কোনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না। যারাই অপরাধে জড়াবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এই হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।

রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণে কিছু দিন ধরে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই সূত্রে ধরেই ভোরে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি চলে। এতে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের বক্তব্যে আরসা ও আরএসও নামে দুটি বিবদমান গ্রুপের নাম উঠে এসেছে।

৮ এপিবিএন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) আমির জাফর বলেন, ভোরে ক্যাম্পে দুই দল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আহত আরও দুই জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারাও সেখানে মারা যান। অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।