সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ভবনের বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের (বিএনসিইউ) সভাকক্ষে ‘পরিবর্তনশীল গতিপথ, রূপান্তরিত শিক্ষা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১০ সালে আমরা একটি জাতীয় শিক্ষানীতি পেয়েছিলাম। এ শিক্ষানীতি প্রস্তুত করা হয়েছিল সংবিধানের চারটি মূলনীতি ও ১৯৭৪ সালের কুদরত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের ওপর ভিত্তি করে। শিক্ষার কাঠামো ঠিক রাখা, সমসাময়িক অসঙ্গতি-অনিয়ম দূর করার জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা শিক্ষা আইন। এ আইন চূড়ান্ত করার কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ সংক্রান্ত কমিটি আইনটি পর্যালোচনা করেছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন শেষে আইনটি সংসদে পাঠাতে পারব। এতে করে শিক্ষার মান উন্নয়নে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত এ আইনটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য আমরা নতুন যে কারিকুলাম তৈরি করেছি, ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে বাস্তবায়নে যাওয়ার কথা। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেহেতু বন্ধ আছে, আমরা ভাবছি অনলাইনে হলেও এটা শুরু করব। পরে যখন সরাসরি পাঠদান শুরু হবে। তখন শ্রেণিকক্ষেই সেটি বাস্তবায়িত হবে।
দীপু মনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে রূপান্তরিত করতে হবে। কেননা বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের সব গতিপথ সারাক্ষণ পরিবর্তিত হচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই শিক্ষাক্রম নিয়ে কাজ করছি। আমরা সবাইকে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জাতীয় উন্নয়নে দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদ প্রয়োজন। তাই প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিটি পর্যায় নিয়ে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য কারিগরি নির্ভর শিক্ষা কাঠামো তৈরি করছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে কেউ বাদ না যায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে শুরু করে দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দাদেরও শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছি। সবাই মিলে চেষ্টা করলে নিশ্চয় তা বাস্তবায়ন সম্ভব।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, করোনায় আমরা খুবই কঠিন সময় পার করছি। শিক্ষা পরিবার মনে হয় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চরম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। আমরা সবাই এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছি। সবার সমন্বিত চেষ্টায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ও বিএনসিইউয়ের মহাসচিব আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি মিজ বিয়াট্রিস কালদুন এবং বিএনসিইউয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি সোহেল ইমাম খান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন।