বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২৬ জন নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, যাদের ৬৫ শতাংশই পরবর্তীতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। এদিকে, বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়, যাদের প্রায় অর্ধেকই নারী। ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, ডায়াবেটিস আছে এমন অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জানেই না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ রোববার (১৪ নভেম্বর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য— ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন।’
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য মতে, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের ও গর্ভস্থ শিশুদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাছাড়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তবে তাদের পরবর্তীতে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি আরও বেশি। এ অবস্থায় পরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করাই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের প্রধান লক্ষ্য। ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন ১৪ নভেম্বর তারিখটিকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তবে, ২০০৭ থেকে পৃথিবীজুড়ে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে জাতিসংঘের স্বীকৃত একটি দিবস হিসেবে।
আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে এ দিবসটির স্বীকৃতি লাভ করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব করে। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘে এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়। এর ফলে গত ১৪ বছর ধরে জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর জাতিসংঘের একটি দিবস হিসেবে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে।