আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

লোহাগাড়ায় বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, লোহাগাড়া: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:১৪:০০ অপরাহ্ন | দক্ষিণ চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন কর্মকর্তা, চুনতি রেঞ্জ ও সাতগড় বন বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় ১ হাজার ফলজ গাছ ও ৯টির অধিক মৎস্য ঘের কেটে পেলার অভিযোগ উঠেছে।

ঘুষ দাবী ও ফলজ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ তুলে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার চুনতি জাঙ্গালীয়া বড়ডেপা ঘোনা এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগীরা। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে এই তিন কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবী জানান।

উক্ত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বন বিভাগের জায়গায় একটি খুপড়ি ঘর ও টয়লেট নির্মান করতেও বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে করতে হয়। অন্যতায় কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মামলা দিয়ে দেয়। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে অন্তবর্তিকালীন সরকার। তাই আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিন বন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, চুনতি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ও সাতগড় বন বিট কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পর অপসারণ দাবী করছি। তারা ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতিসহ হয়রানী করে প্রতারণা করেছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান বক্তারা।

বক্তব্য রাখেন, মো. জাকারিয়া, হাবিবুর রহমান, মো. ইসমাঈল, মো. আইয়ুব, মো. মতিউর রহমান, আনোয়ার হোসেন, মো. আলম মেম্বার, আবু সাঈদ, মো. সোহেল প্রমূখ।

ভুুক্তভোগী মো. ইসমাঈল বলেন, আমার বড় ভাই সাজেদা এগ্রো ফিসের মালিক। আমাদের নিজস্ব জমিতে সাজেদা এগ্রো ফিসের নামে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মাছের প্রজেক্ট তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতি বছর বন বিভাগের লোকজনদের বিভিন্ন হারে চাঁদা দিতে হতো। স্বৈরচারী সরকার পতনের পর আগের ন্যায় ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বহিরাগত লোকজন নিয়ে বন কর্মকর্তা (এসিএফ) দেলোয়ারের নেতৃত্বে লোকজন নিয়ে ৯টি মাৎস্য ঘেরের পাড় ও ১ হাজার ফলজ চারা কেটে দেন। ওই দিন মৎস্য ঘেরে থাকা কর্মচারীরা প্রতিবাদ করলে হামলা ও মামলার ভয় দেখান।  যার ফলে আমার ৪০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চুনতি বনরেঞ্জর সাতগড় বনবিটের আওতাধীন জাঙ্গালীয় বড়ডেপা ঘোনা এলাকায় সরকারি সমাজিক বনায়ন ঘেষে ৯টি মৎস্য ঘের। সবকটি মৎস্য ঘেরের পাড় কেটে দেওয়া ও পানি শূন্য। খামার বাড়ি সংলগ্ন লেবু বাগানের গাছ কেটে ফেললেও আশপাশের গাছ গুলো অক্ষত আছে।

আরেক ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান বলেন, বিটিশ আমল থেকে আমার পূর্ব পুরুষরাও বড়ডেপা ঘোনায় চাষাবাদ করে আসছে। এখন আমারা চাষাবাদেও পাশাপাশি মৎস্য চাষ শুরু করছি জীবন ধারনের জন্য। পরিবেশ নষ্ট হওয়ার মতো কোন কাজ করছি বলে মনে হয়নি। হঠাৎ দলবল নিয়ে বন বিভাগের লোকজন  অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কেটে দেয় মৎস্য ঘের ও ফলজ গাছ। ঘুষ দিলে সবি সম্ভব বন বিভাগে। ঘুষ না দেওয়াতে আজকে এই পরিনতি।

এদিকে, অভিযুক্ত বন কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে কল দেওয়ার পর রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।