টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে রাউজানের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে উপজেলার সর্তাঘাট, লাঠিছড়ি, ডাবুয়া,হলদিয়া, রাউজান সদর, কাঁশখালী, বেরুলিয়া ও কলমপতি খালের বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভেঙে গেছে ডাবুয়া খালের বাঁধ। ফলে মানুষর বাড়িঘরে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক গুলো। পানিতে ডুবে আছে ফসলি জমি। মৎস্য খামারিদের পুকুর ডুবে গিয়ে ভেসে গেছে মাছ।
গতকাল বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার পশ্চিম নোয়াপাড়া, মোকামীপাড়া, সামমাহালদারপাড়া, ছামিদর কোয়াং, কচুখাইন, দক্ষিণ নোয়াপাড়া; উরকিরচর ইউনিয়নের মইশকরম, সওদাগরপাড়া, সুজারপাড়া, পূর্ব উরকিরচর, খলিফার ঘোনা ও বৈইজ্জাখালি, বাগোয়ান, পশ্চিম গুজরা, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইর, হলদিয়া,ডাবুয়াসহ কয়েকটি গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে রয়েছেন। হালদা নদীর তীরবর্তী নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ছামিদর কোয়াং, মোকামী পাড়া ও উরকিরচর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে ঢোকার দুটি সড়ক কোমর সমান পানিতে ডুবে গেছে। গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার অনেকটা ঘরবন্দী সময় কাটাচ্ছেন। এলাকার কয়েক শ একর চাষাবাদের জমি ৫ থেকে ৬ ফুট পানি নিচে ডুবে রয়েছে। পানির তোড়ে ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের কয়েকটি খুঁটি। এতে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আশপাশের গ্রাম।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হালদা নদীর হাটহাজারীর অংশে বেড়িবাঁধ দেওয়া হলেও রাউজান অংশে তা নেই। তাই অমাবস্যা-পূর্ণিমা তিথিতে জোয়ারের উচ্চতা বাড়ার কারণে গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়ে। এবার বৃষ্টির কারণে পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরা। রাউজানের ছামিদর কোয়াং গ্রামের বাসিন্দা সালামত উল্লাহ বলেন, তাঁদের গ্রামের প্রায় সব বাড়িঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক ভেঙে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
গাড়ি চলছে না। মোকামীপাড়ার বাসিন্দা এস এম হাসান বলেন, তাঁর বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুটি ভেঙে পুকুরে ডুবে গেছে। বাড়ির বাসিন্দারা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভোগান্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এ ব্যাপারে রাউজান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার নিয়াজ মোরশেদ বলেন, টানা বর্ষন, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে রাউজানের নিম্মঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করতে মাঠে রয়েছি। সকল ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় ত্রান ও দুর্যোগ বিভাগ ও রাউজান উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুুত রয়েছে।