নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের (কাস্টিং ভোট) আট ভাগের এক ভাগ পেতে হবে। সে হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) এ আসন থেকে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৫ জন প্রার্থীর। তৎমধ্যে পরিচিত মুখ হিসেবে রয়েছেন মীরাক্কেল তারকা কমর উদ্দিন আরমান ও এমপি পুত্র তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন। এরা দু'জনই ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী। জামানত বাজেয়াপ্ত ৫ জন প্রার্থীর কেউ হাজার উপরে ভোটের সংখ্যা অতিক্রম করতে পারেনি।
কক্সবাজারের আলোচিত চকরিয়া-পেকুয়া এ আসনে বেসরকারি ফলাফলের ঘোষণা মতে হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে ৮১ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ট্রাকগাড়ি প্রতীক নিয়ে জাফর আলম। পরাজিত এমপি জাফর আলম ট্রাক প্রতীক নিয়ে প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫২ হাজার ৯৮৬ ভোট।
চকরিয়া-পেকুয়া আসনে ৭ জন প্রার্থী থাকলেও ভোটযুদ্ধে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় জাফর আলম ও কল্যাণ পার্টির ইবরাহিমের মাঝে।
সোমবার দুপুরে কক্সবাজার-১ চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদ্বয় ৫ জন প্রার্থীর জামানাত বাজেয়াপ্ত হওয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, চকরিয়া-পেকুয়া আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৭৩ জন। এরই মধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১১৪টি ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৪৭ জন পুরুষ ও এক লাখ ৬৪ হাজার ২৪২ জন নারী মিলিয়ে ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০৯ জন। অপর দিকে পেকুয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৪৪ ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে ৭২ হাজার ৫৫ জন পুরুষ ও ৬০ হাজার ৮০৯ জন নারীসহ ভোটার ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৪ জন।
এদিকে,রবিবার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনে দুই উপজেলায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৬১৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তৎমধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১৩৭২৭৬ ভোট এবং বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৩৩৩৭ ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা ২৮.৯২%। এ আসনে ১৫৮টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৫টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ভোটের উপর ভিত্তি করে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নানা অনিয়মের অভিযোগে তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেয়া হয়।
নির্বাচনে স্থগিত কেন্দ্র তিনটি হলো চরন্দ্বীপ ভূমিহীন সমবায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কেন্দ্র নম্বর ২৫), দক্ষিণ ফুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কেন্দ্র নম্বর ৭৪), মরংঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কেন্দ্র নম্বর ৮০)।
চকরিয়া-পেকুয়া আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির হোসনে আরা (লাঙ্গল) তার প্রাপ্ত ভোট ৭৭৩। স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি পুত্র তানভীর ছিদ্দিকী তুহিন (ঈগল) তার প্রাপ্ত ভোট ২৪৪। বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির হাজী বশিরুল আলম (হাতুড়ি) তার প্রাপ্ত ভোট ৫৩৭। ইসলামী ফ্রন্টের বেলালউদ্দিন (মোমবাতি) তার প্রাপ্ত ভোট ৬৯১। স্বতন্ত্র প্রার্থী মিরাক্কেল তারকা কমর উদ্দিন আরমান (কলারছড়া) তার প্রাপ্ত ভোট ১৮০। সদ্যসমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি জাফর আলম ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটযুদ্ধে থাকলেও পাশাপাশি তার ছেলে তানভীর ছিদ্দিকী তুহিনও ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।এই আসনে এমপি জাফর আলম ৫২ হাজার ৯৮৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হলেও তার ছেলে তুহিন ও মীরাক্কেল তারকা আরমানসহ ৫ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।