মিরসরাইয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১’শ কৃষকের মাঝে বিআর-২২ জাতের ধানের চারা বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা দুর্বার প্রগতি সংগঠন। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কৃষি উন্নয়ন সংগঠন পত্র পল্লব এর সহযোগিতায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে ধানের চারা বিতরণ করা হয়। দুর্বারের বিতরণকৃত ধানের চারা দিয়ে প্রায় ছয় একর জমিতে লাগানো যাবে বলে জানা গেছে।
বন্যায় মিরসরাই উপজেলার ধানের বীজতলা ও আমনের রোপা পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে উপজেলা ধানের চারা সংকট দেখা দেয়। কৃষকদের সহায়তার জন্য দুর্বার প্রগতি সংগঠন ও কৃষি উন্নয়ন সংগঠন পত্র পল্লব এর উদ্যোগে গত ১ সেপ্টেম্বর সদস্যদের স্বেচ্ছাশ্রম ও স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতায় উপজেলার মিঠানালা ও মঘাদিয়া ইউনিয়নের পঁচিশ শতক জমিতে বপন করেন বিআর-২২ জাতের ষাট কেজি আমন ধানের বীজ। 'দূর্যোগে ঐক্য গড়ি- কৃষিতে স্বপ্ন বুনি' এ প্রতিপাদ্য নিয়ে নিবিড় পরিচর্যায় বীজতলায় দীর্ঘ এক মাস পর চারা পরিণত হয়।
ধানের চারা নিতে আসা কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন- দুর্বারের ধানের চারা পেয়ে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। খালি পড়ে থাকা কিছু জমি অন্তত চাষ করা যাবে। কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন- এবারের বন্যায় দুর্বারের সদস্যরা আমাদের ধানের চারা দিয়েছে। তাদের এ উদ্যোগে আমরা অনেক খুশি।
সংগঠনের সভাপতি রিপন কুমার দাশ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে অবদান রাখতে আমরা সবসময় বদ্ধপরিকর। সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কৃষকদের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল আমাদের লক্ষ্য। আমরা বিশ্বাস করি, কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ-সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশ। ধানের চারা বিতরণ প্রকল্পে সার্বিক তত্ত¡াবধান করেন উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রকল্পে অর্থায়ন করেছেন আমেরিকা প্রবাসী আবু জাহেদ। চারা বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন দুর্বার সদস্য, শুভাকাঙ্খী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও স্থানীয় কৃষকবৃন্দ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, এবারের বন্যায় কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুর্বার প্রান্তিক কৃষকদের চারা বিতরণে তারা উপকৃত হয়েছে। আমি দুর্বারের মত সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক মাহফুজা জেরিন বলেন, কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে দুর্বারের এ উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বন্যায় কৃষকদের ক্ষতি কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে তাদের থেকে ধানের চারা পেয়ে।
উল্লেখ্য, ২১ আগস্ট থেকে ভয়াবহ বন্যায় দুর্বারের স্বেচ্ছাসবীরা পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার, আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছানো, রান্না করা খাবার, শুকনা খাবার, স্যালাইন, ঔষুধ বিতরণ ও পুনর্বাসন সহ প্রায় ছয় হাজার মানুষদের সেবা প্রদান করে।