কক্সবাজারের মহেশখালী-বদরখালী ব্রীজের দক্ষিণ পাশে নৌ-চ্যানেলে বিশাল প্যারাবন কেটে নদীর চর দখল করা হচ্ছে। প্রায় ৩শত শ্রমিক দিয়ে চিংড়িঘের নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুচক্র। এতে ক্ষমতাশীন দলের লোকজন জড়িত। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির ইন্ধনে প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে চিংড়ি ঘের নির্মাণ কাজ চলছে বলে অভিযোগ মিলেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলার-বদরখালী মহেশখালী ব্রীজের দক্ষিণ পাশে প্যারাবন থেকে মাটি কেটে বাঁধ দিচ্ছে শ্রমিকরা। চলছে চিংড়িঘের নির্মাণ কাজ। এতে খরস্রোতা নদীর গতিপথ পাল্টে যাচ্ছে।
খবর পেয়ে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা পুলিশ ও বনবিভাগের টিম ঘটনাস্থলে যায়। তারা ঘের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে জড়িত কেউ আটক নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের রাতে জলোচ্ছ্বাসে ভেঙ্গে যায় বেড়িবাঁধ। এরপর উপকূলীয় এলাকায় বনায়নে এগিয়ে আসে দেশের একটি এনজিও সংস্থা উবিনীগ। সংস্থাটি সবুজ বেষ্টনীর আওতায় ব্যাপক বাইন ও কেওড়া গাছের চারা রোপণ করে। এসব চারা এখন বড় গাছে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোল (বাপা) মহেশখালী আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, উপকূলের রক্ষাকবচ প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে প্রবাহমান নদীর দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ জঘন্যতম অপরাধ। বলতে গেলে দখলের থাবায় মহেশখালী-বদরখালী চ্যানেলের এক সময়ের প্রাণচঞ্চল এই নদীটি এখন সরু খালে পরিণত হয়ে বোবা কান্না করছে। নদীটি উদ্ধার করে প্রাণচঞ্চল ফিরে আনা সময়ের দাবি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোল (বাপা) মহেশখালী আঞ্চলিক শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলা উদ্দিন আলো জানান, বাপার সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করে। প্রশাসন তাৎক্ষণিক কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
কক্সবাজার উবিনীগ আঞ্চলিক শাখার সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন খাঁন
(খাঁন জয়নাল) বলেন, প্যারাবনের চারদিকে বাঁধ দিয়ে চিংড়ি ঘের নির্মাণের পাঁয়তারা একটি জঘন্যতম অপরাধ। এটি বন্ধ করে নদীর জায়গা নদীকে ফেরৎ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাতুজ্জামান বলেন, নদী দখলকারীদের কোন ছাড় নাই। চিংড়িঘের নির্মাণ করার খবর পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।