ফটিকছড়িতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. মোস্তফা (২২) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। একই সাথে বিচারের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষককে সুকৌশলে সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আমিন তালুকদার নামে স্থানীয় এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। পরে গত ১৭ অক্টোবর প্রেমিক মোস্তফাকে প্রধান আসামী করে ও যুবদল নেতা আমিন তালুকদারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী।
ধর্ষণের শিকার ভূক্তভোগী মনি (ছন্দনাম) বলেন, ‘তিন বছর আগে ফেসবুকে মো. মোস্তফার (২২) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সুবাদে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রামের সি-বিচ এলাকাসহ নগরীর একাধিক স্থানে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এসময় বার বার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। মোস্তফা আমাকে ছাড়া বাঁচবে না, আমাকে নিয়ে সুখের সংসার করাসহ নানা আশ্বাসে আমি তার কথা বিশ্বাস করে পরিবারের অজান্তে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে ঘর থেকে বের হই। মোস্তফা সিএনজি যোগে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে ফটিকছড়ির ফকিরাচাঁন আঁধাইয়ারটেক এলাকায় মোস্তফার দুলাভাই সালাউদ্দিনসহ গাড়িটি গতিরোধ করে। পরে স্থানীয় আমিন তালুকদার, করিম বলি, সেলিম এলোপাতারী চড়, থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে জোরপূর্বক আমার কাছে রক্ষিত নগদ ৫০ হাজার টাকা চিনিয়ে নেয় মোস্তফা। একই সাথে গলায় থাকা স্বর্ণের চেইনটি আমিন তালুকদার ছিনিয়ে নিয়ে আমাকে টানা-হেঁচড়ে তার অফিসে নেয়। সেখানে রাত ৮টা পর্যন্ত আটকে রাখলেও মোস্তফাকে সুকৌশলে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয় তার দুলাভাই সালাউদ্দিনসহ আমিন তালুকদার। পরে সেখানে আটকে থাকা অবস্থায় আমাকে পরিবার এসে উদ্ধার করে। ঘটনার পরদিন থানায় মামলা করতে না পেরে আদালতে মামলা করি।’
ভুক্তভোগি তরুণীর হতদরিদ্র কৃষক বাবা মো. ইউনুস জানান, তারা প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকায় আমার মেয়ের উপর অন্যায়-অবিচার করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত ধর্ষক মো. মোস্তফাকে তার মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, মামলার পরবর্তী সময়ে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। অন্য অভিযুক্ত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. আমিন তালুকদার। ঘটনার বিষয়ে আমিন তালুকদার বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে সৃষ্ট ঘটনা সমাধানের জন্য এলাকার লোকজন সেদিন আমার কাছে এসেছিল। আমি বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছি। পরে তারা আদালতে গিয়ে মামলা করেছেন। করতেই পারেন।
তবে মামলা হলেও শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ মামলার কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেননি। তারা এ বিষয়ে এখনো কোন নির্দেশনাও পাননি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমেদ জানান, এখনো আদালতের কোন নির্দেশনা পাইনি। তবে আমি অফিসের কাজে একটু বাইরে আছি। মামলার নথিপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের ধরার জন্য অভিযান শুরু করা হবে।