বিল পরিশোধে দেরি হওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে রাখায় চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে যমজ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। পরে ক্লিনিকের চার কর্মকর্তাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। একইসঙ্গে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার ঝরনাপাড়া এলাকার মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া দুই নবজাতকের বাবা মো. মনির হোসেন অটোরিকশাচালক। তার স্ত্রী লাভলী বেগম (২২) গৃহিণী।
মনির হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে লাভলীকে মাতৃসেবা নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে ভর্তি করি। আধাঘণ্টা পর যমজ সন্তানের জন্ম দেয় স্ত্রী। কিছুক্ষণ পর নবজাতকদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন ক্লিনিকের চিকিৎসক। তখন ক্লিনিক থেকে ১০ হাজার টাকা বিল দেওয়া হয়। আমি পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বলি, বাচ্চা তো নরমাল ডেলিভারিতে হয়েছে। আপাতত পাঁচ হাজার রাখেন, বাকি টাকা পরে দেবো। কিন্তু এরই মধ্যে নবজাতকদের অক্সিজেন মাস্ক খুলে রাখেন তারা। সেইসঙ্গে অন্য হাসপাতালেও নিতে দেননি। ফলে আমার দুই সন্তান মারা যায়। তিন ঘণ্টা পর প্রতিবেশীসহ আমরা টাকা নিয়ে হাসপাতালে গেলে মৃত দুই নবজাতক বুঝিয়ে দেয় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘ক্লিনিকের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে আমার দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এজন্য দায়ীদের শাস্তির দাবি জানাই।’
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দুই নবজাতকের মৃত্যুতে স্বজনদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ক্লিনিকে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্লিনিকের নার্স-কর্মচারীসহ চার জনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। আপাতত ক্লিনিকটিতে তালা লাগিয়ে দিয়েছি আমরা। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। এমন ঘটনা অমানবিক। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’