কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানীতে স্বত্ব দখলীয় একটি জমি দখলে নিতে সরাসরি মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের নেতার এক জামাতা। তিনি বিচারকও। এই দুই পরিচয়কে পুঁজি করে জমির মালিকদের হয়রানি করছেন। বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন।
এমনকি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জমির প্রকৃত মালিকদের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি মামলা রুজু করেছেন। বিচারকের চাপাচাপিতে জমির মালিকদের বিরুদ্ধে থানা মামলা নিতে বাধ্য হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে জমির প্রকৃত মালিকরা চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন মহলের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা যায়, কক্সবাজার সদরের বাংলাবাজার এলাকার সৌদি প্রবাসী নাছির উদ্দিন তার ৬ ভাই ক্রয়সূত্রে ইনানীতে ২৭ শতক জমির মালিক হন। জমিটি ইনানী মেরিন ড্রাইভ সড়কের সাথে লাগোয়া হওয়ায় দখলবাজ চক্রের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। ভূমিগ্রাসী চক্রটি জমি দখলে নিতে বিচারককে ব্যবহার করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জমিটি দখলে নিতে যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছেন বিচারক।
তিনি আত্নীয় ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে দিনে ও রাতের অন্ধকারে বাউন্ডারি ওয়াল তৈরী করছেন।
জমিতে কাজ বন্ধ রাখতে আদালতের শরণাপন্ন হন জমির মালিকরা। আদালত জমিতে কাজ বন্ধ রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ অব্যাহত রেখেছেন।
জমির মালিক নাছির উদ্দিন জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ইনানীর ফরিদ আহমদ, সিরাজ আহমদ, মোহাম্মদ উল্লাহ, আহাম্মদ হোসন সিকদার
থেকে ২৭ শতক জমি ক্রয় করে আমরা ৭ ভাই জমির স্বত্ববান হয়। সম্প্রতি ওই জমির সাথে কোন ধরণের সম্পর্ক নেই এমন কতিপয় ব্যক্তি জমিটি জবরদখলের চেষ্টা করছে, এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সেখানে দেখি, আতা উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি নিজেকে বিচারক পরিচয় দিয়ে জমিটি তার দাবী করে আমাদের শাসাতে থাকেন। আমরা বিচারককে কাগজের দলিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে চাইলে তিনি ক্ষেপে যান। আমরা জমির দখল ছেড়ে না দিলে তিনি আমাদের কঠিন বিপদে পড়তে হবে বলে হুমকি দেন।
জমির অপর মালিক সালাহ উদ্দিন জানান, সম্প্রতি আমাদের মালিকানাধীন জমিতে মহেশখালীর আতা উল্লাহ নামের এক বিচারক তার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত কার গাড়ীতে "বিচারক" লেখা স্টিকার লাগিয়ে অবস্থান নেয়। তার সাথে কক্সবাজার শহরের চিহ্নিত অপরাধীদের দেখা গেছে। বিচারক দাঁড়িয়ে থেকে জমিতে মাটি ভরাটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়া বিচারককে ফুফাতো ভাইয়ের মেয়ে জামাই পরিচয় দিয়ে জনৈক কায়সার উদ্দিন রুবেল জমিটি দখল করে রেখেছেন। রুবেল ছাড়াও স্থানীয় শমশু মেম্বার, তার ছেলে রুবেল, আব্দু সালাম, আমিনসহ অর্ধশত সন্ত্রাসী প্রতিদিন ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমিতে অবস্থান করছেন। আমরা বিষয়টি উখিয়া থানা পুলিশ ও ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানালেও তারা বিচারকের হস্তক্ষেপের কারণে আমাদের তেমন কোন সহযোগিতা করতে পারেনি। এমনকি আমাদের মালিকানাধীন জমির উপর অবস্থানকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করা হলেও পুলিশ আমাদের মামলা নথিভুক্ত করেনি।
এদিকে নিজেদের মালিকানাধীন স্বত্ব দখলীয় জমিতে বিচারক পরিচয়ে আতা উল্লাহ নামের ব্যক্তির নগ্ন হস্তক্ষেপের বিষয়টি লিখিত আকারে প্রধান বিচারপতি, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন বলে জানান জমির মালিক নাছির উদ্দিন।
জমিতে দখলে নেতৃত্ব দানকারী কায়সার উদ্দিন রুবেল জানান, অন্যের জমি দখল করছি না। মেয়ের জামাই আতা উল্লাহ জমিটি কিনেছেন। আমি তার জমি পাহারা দিচ্ছি।