প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দেখেছি বিএনপি নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করেছে। তাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে। তাদের সবার হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেন। দেশের মানুষকে আমরা নিরাপত্তা দেব। তারা যেনো ভালো থাকে এজন্য আগে থেকেই আমরা ব্যবস্থা নেব।
সোমবার (১ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের পরে ইউক্রেনে যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরই বিশ্ব মন্দা। শুধু বাংলাদেশ না বিশ্বে উন্নত দেশে আমেরিকার মত জায়গায় যেখানে ইনফ্লেশন এক ভাগ ছিল সেটা এখন ৯ দশমিক ১ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ইংল্যান্ডে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ সেখানে ইনফ্লেশন। জার্মানিতে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ইনফ্লেশন। নেদারল্যান্ডে সেখানে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, সমস্ত ইউরোপে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ তাদের ইনফ্লেশন রেট। বাংলাদেশে এখনও আমরা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ আমাদের ইনফ্লেশন ধরে রাখতে পেরেছি। যেখানে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি ১ ইঞ্চি জমি যেন পড়ে না থাকে। সবাই কিছু কিছু উৎপাদন করবে। সে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি এবং আমাদের সবাই এই কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড, পুলিশ সদস্য থেকে শুরু করে তাদের আমি নির্দেশ দিয়েছি- যেখানে যত খালি জায়গা আছে সব জায়গায় উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে এবং তারা তরকারি, ফলমূল উৎপাদন করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে আহ্বান জানাতে হবে, দেশবাসীর কাছে যেতে হবে, তাদেরকে আহ্বান জানাতে হবে বিশ্বব্যাপী যেখানে খাদ্য মন্দা সেখানে আমাদের খাদ্য আমাদের নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজ আমেরিকা, ইংল্যান্ড এমনকি আমাদের প্রতিবেশী ভারতেরও কিন্তু বিদ্যুৎ বা জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। বিষয়টা সবার মাথায় রাখতে হবে। যখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খায় তখন আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারণ ভবিষ্যতে যেনো আমরা কোন রকম বিপদে না পড়ি। সেটা মাথায় রেখে আমরা এ সাশ্রয়ী হচ্ছি। সাশ্রয়ী হওয়ার অর্থ এই না এখান থেকে একেবারে লুটপাট করে খেয়েছি। লুটপাট তো বিএনপি করে গেছে। আমরা সেটা বন্ধ করে উন্নতি করেছি। মাত্র সাড়ে তিন হাজার বিদ্যুৎ থেকে আজকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সক্ষম হয়েছি। লুটপাট করলে সেটা করা সম্ভব হতো না। লুটপাট করলে কি হয় কমে যায়, ৪০০০ মেগাওয়াট থেকে যারা ২৩০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে তারাই লুটপাট করে। যারা বাড়াতে পারে তারা লুটপাট করে না। প্রতিটি পয়সা কাজে লাগিয়ে উৎপাদনটা বাড়ানো হয়।
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাৎছিম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।