বান্দরবানে দু’দিনে পর্যটন থেকে আয় কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। জেলার পর্যটন ব্যবসায় সম্পৃক্ত বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর বান্দরবানে বেসরকারি পর্যটনখাত সম্পৃক্ত সব ব্যবসায়ীর সর্বমোট আয় দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া শুক্রবার বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত নীলাচল ও মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে আয় দাঁড়িয়েছে সাত লাখ টাকা। যা সব মিলে এক কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বান্দরবানে পাঁচ হাজার পর্যটকের ধারণক্ষমতা থাকলেও ১৬-১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো হোটেল মোটেল ও রিসোর্টের কক্ষ খালি ছিল না। ভ্রমণপ্রত্যাশীরা এসব হোটেল-মোটেলের রুম অগ্রিম বরাদ্দ দিয়ে রাখেন।
বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, সমিতির অন্তর্ভুক্ত ছোট বড় মিলিয়ে ৬২ হোটেল রয়েছে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন গড়ে আনুমানিক ৪০ হাজার টাকা হিসেবে দুই দিনে ৪৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় হয়েছে।
হোটেল রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি মো. গীয়াস উদ্দীন মাস্টার জানান, সমিতির অন্তর্ভুক্ত ছোট বড় ৪০ হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়া সমিতির বাইরে রয়েছে আরও ২০টি। গত দুদিনে প্রতিদিন গড়ে প্রত্যেক হোটেল-রেস্তোরাঁ আনুমানিক ২০ হাজার টাকা আয় করেছে। সে হিসেবে দুই দিনে আয় হয়েছে ২৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বান্দরবান জিপ-মাইক্রোবাস লাইন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অমল কান্তি দাশ জানান, পর্যটকদের চাপে গাড়ির লাইন পরিচালনা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে বাসের ব্যবস্থা রয়েছে।
জিপ-মাইক্রোবাস মালিক সমিতির লাইন ম্যান ও লাইন কাউন্টার ম্যানেজার কামাল জানান, প্রতিদিন ৩৫০টি করে মোট ৭০০ পর্যটক বাহী গাড়ি গত দুইদিনে নীলগিরির উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে গেছে। প্রতিগাড়ি ভাড়া সাড়ে চার হাজার টাকা। সে হিসেবে দাঁড়ায় সাড়ে ৩১ লাখ টাকা। এছাড়া লোকাল স্পটের সিরিরিয়াল না থাকায় তাদের আয়ের সঠিক তথ্য বলা যাচ্ছে না। তবুও তাদের আনুমানিক আয় ১০ লাখ হয়েছে।
থ্রি হুইল সিএনজি ও মাহিন্দ্রা শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম জানান, সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রায় তিনশ শ্রমিক রয়েছে। সবাই এ দুদিনের প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকা করে আয় করেছে। সব মিলে যা আনুমানিক ১৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
মেঘলা ও নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কায়েসুর রহমান জানান, শুক্রবার নীলাচলে র্যাফল ড্র উপলক্ষে প্রবেশ মূল্য ছিল একশ টাকা। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে ছিল পূর্বের ন্যায় ৫০ টাকা। বিক্রয় হওয়া টিকিট গণনা হিসেবে নীলাচলে সাড়ে পাঁচ হাজার এবং মেঘলাতে তিন হাজার পর্যটকের উপস্থিতি ছিল। এতে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের আয় দাঁড়ায় সাত লাখ টাকা।
বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল হক জানান, টানা ছুটিতে জেলায় লক্ষাধীক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। তাদের সুরক্ষায় টহল বৃদ্ধি, নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা সার্ভিস, হোটেল, মোটেল, রিসোট, রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত মূল্য বা হয়রানির শিকার হতে না হয় সে বিষয়ে তৎপর ছিল পুলিশ।
বান্দরবান পুলিশ সুপার জেরিন আখতার জানান, বছরজুড়েই কম-বেশি পর্যটক আসে। বিজয়ের মাস ও টানা ছুটির কারণে প্রচুর পর্যটকের এসছে। তাদের সুরক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ কাজ করেছে।