মোবাইল সেট বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নতুন নির্দেশনা দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোবাইল ফোন বৈধ বা অবৈধ যাই হোক না কেন, যেকোনো মুঠোফোন নেটওয়ার্কে সেটি হলে তা বন্ধ করা যাবে না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করেই ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এই পরির্বতন আনা হয়েছে।
এর আগে, গত ১ জুলাই পরীক্ষামূলকভাবে এবং ১ অক্টোবর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করে বিটিআরসি। ওই ব্যবস্থা চালুর পর মাত্র ৩ দিনেই ১ লাখ ২৫ হাজার ‘অবৈধ’ ফোন শনাক্ত হয়।
সেসময় বিদেশ থেকে আনা হিসেবে পাওয়া মোবাইল ফোন নিবন্ধন করতে বলে বিটিআরসি। সেসব নিবন্ধনে ভোগান্তির কথা বলছিলেন অনেক গ্রাহক।
তার পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির মহাপরিচালক শহীদুল আলম জানিয়েছিলেন, অবৈধ সব ফোন বন্ধ হবে, এটা নিশ্চিত। তাই গ্রাহকের উচিত যাচাই করে মুঠোফোন কেনা।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এনইআইআর ব্যবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানান, ব্যবস্থাটি চালুর পর মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছিল। এখনো বাজারে বিক্রি হওয়া মোট ফোনের ৭০ শতাংশ হয় ফিচার ফোন। সেখানে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। তাদের জন্য নিবন্ধন একটি ভোগান্তির কাজ। বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ জানে না কীভাবে মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর (শনাক্তকরণ নম্বর) দিয়ে বৈধ-অবৈধ যাচাই করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে আলাপ হয়েছে’। তিনি (উপদেষ্টা) মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন বলেও জানান মন্ত্রী। সে অনুযায়ী বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বিকাশের জন্য মুঠোফোনের ব্যবহার আরও বাড়ানো দরকার। সেখানে যদি মুঠোফোনের নিবন্ধন নিয়ে ভোগান্তির কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সেটা আরও বড় ক্ষতি।
প্রসঙ্গত, দেশে নকল ও অবৈধ হ্যান্ডসেট আমদানি ঠেকাতে গত ১ জুলাই এনইআইআর কার্যক্রম চালু করে বিটিআরসি। এই ব্যবস্থা চালুর দিন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত- অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে বিদেশ থেকে আনা স্মার্টফোন কিংবা অবৈধ হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। শুধু তাই নয়, নেটওয়ার্কে থাকা হ্যান্ডসেট কিংবা নতুন হ্যান্ডসেট কেনার আগে বৈধতা যাচাইয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়। তারপর থেকেই মুঠোফোন নিবন্ধন করতে গিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে।