ফটিকছড়িতে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক স্কুল ছাত্রীকে ফিল্মি কায়দায় অপহরনের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ভুজপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পরই ভুজপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্থানীয় জনতার সহায়তায় নাছির উদ্দিন ও শওকত নামে অপহরনকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটক নাছির (২৪) ভুজপুর থানাধীন নারায়নহাট ইউনিয়নের চাঁনপুর মাইজকান্দি গ্রামের কাঞ্চনের ছেলে ও শওকত ভূজপুর হরিনাকুল এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ঘটনার সাথে জড়িত নাছিরের ভাই ওসমান এবং তার সহযোগীসহ অন্যদের এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। ভুজপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা তাপস চন্দ বাবু জানান, প্রতিদিনের মত ভিকটিম স্কুল ছাত্রী স্কুলে আসছিল। নাছিরের নেতৃত্বে অপহরণ কারী চক্রের সদস্যরা ৩ টি মোটর সাইকেল ও একটি নোহা মাইক্রো নিয়ে স্কুলের সামনে অবস্থান নেয় আগে থেকেই। ভিকটিম তাদের গাড়ী বরাবর আসা মাত্রই নাছির, তার ভাই ওসমানসহ অপহরনকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা মিলে ভিকটিমকে টেনে হিঁচড়ে মাইক্রোতে তুলে নেয়। এরপর দ্রুত বেগে গাড়ী চালিয়ে ভুজপুর রাবার ড্যাম এলাকার কাজিরহাট গাড়ীটানা সড়কের কৈয়াছড়া চা বাগান এলাকায় নিয়ে যায়। এসময় অপহরনকারীদের সাথে ধস্তাধস্তি করায় শারীরিক ভাবে কিছুটা আহত হন ভিকটিম স্কুল ছাত্রী। পরবর্তীতে চা বাগান এলাকায় নিয়ে অপহরনকারীরা দেখে তারা যাকে অপহরন করতে এসেছিল তুলে নিয়ে আসা স্কুল ছাত্রী সে নয়। তাদের আসল টার্গেট মিস হয়েছে। বোরকা ও হিজাব পড়া থাকায় তাদের আসল টার্গেট মিস হয় বলে জানা গেছে। এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন স্কুল পরিচালনা কমিটির সহায়তায় প্রশাসনকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক ভুজপুর থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে অপহরনকারীরা ভিকটিমকে চা বাগানের রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তাপস চন্দ বাবু বলেন, পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় অপহরনকারী চক্রের মূল হোতা নাছির এবং পরিকল্পনায় নেতৃত্বদানকারী শওকতকে আটক করতে সক্ষম হয় বলেও জানান তিনি। এদিকে স্থানীয় একটি নির্ভর যোগ্য সুত্র জানায়, ভুজপুরের বিএনপি নেতা ও মাটি ব্যবসায়ী শওকতের সহায়তায় এ অপহরনের ঘটনা ঘটে। সুত্রটি জানায়, শওকত দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে নাছিরকে গাড়ী ভাড়া করে দেয়াসহ পুরো অপহরন ঘটনার পরিকল্পনা করে। ভিকটিম কখন স্কুলে আসবে কিভাবে তাকে তুলে নেয়া হবে এসবের পরিকল্পনায় ছিল শওকত। এদিকে এ ঘটনার পর ভিকটিমের পিতা নবীর হোসেন ভুঁইয়া ভুজপুর থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি। তিনি এঘটনার পর তাঁর মেয়েসহ স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবী জানান। এ ছাড়া ঘটনার সাথে জড়িতদের সকলকে আইনের আওতায় আনারও জোরদাবী করেন তিনি। এ ব্যাপারে ভুজপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজু বলেন, স্কুল ছাত্রী অপহরনের ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে এজাহার নামীয় দুইজন ও অজ্ঞাতনামা পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা ৫(৩)/২৩ দায়ের করেছেন। এ মামলায় নাছির ও শওকত নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।