স্বপ্নার বয়স ৩৫ বছর। স্বামীহারা স্বপ্নার দুটি পা নেই। চলাচলে ওনার ক্ষমতা না থাকলেও হুইল চেয়ারে করে তার একমাত্র মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আসেন কম্বল নিতে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর একটি কম্বল হাতে পেয়ে আনন্দে দিশেহারা প্রতিবন্ধী স্বপ্না। যেন তিনি আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন। কারণ এই ধরনের কম্বল স্বপ্না এই প্রথম পেয়েছে। লাঠির উপর ভর করে আসা রাখাল জলদাশ (৯০) শীতের কাছে হার মেনে কাঁপছে আর সময় গুণছে মাহেন্দ্রক্ষণের। একটু পরেই কম্বলের জন্য তার নাম ডাকাতে ফুকলা দাঁতে হেঁসে দেন তিনি। আসলে এই শীতে একটি কম্বল কত প্রয়োজন তা একমাত্র শীতে কষ্ট পাওয়া এসব গরিব মানুষেরাই ভালো জানেন। শুধু স্বপ্না কিংবা রাখাল জলদাশ নয় এরকম এক শতাধিক বয়স্কদের মাঝে উন্নত মানের কম্বল বিতরণ করেছে চন্দ্রঘোনা প্রবাসী ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটি শুরু থেকে বিভিন্ন সামাজিক কাজে অবদান রেখে সমাজে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন আগত অতিথিরা। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে চন্দ্রঘোনা বহুমুখী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিচ আজগর। প্রধান অতিথি ছিলেন বেওয়ারিশ সেবা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জনাব মো. শওকত হোসেন (পিপিএম)। মো.কিরনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চন্দ্রঘোনা বহুমুখী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা মোস্তাফা কামাল, ব্যবসায়ী ইসতিয়াক হোসেন সাদিল, সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফজল করিম, প্রবাসী ঐক্য পরিষদের বাংলাদেশে প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মো. ফরিদ খোকন, সিনিয়র উপদেষ্টা মো. নাছের, মো. জালাল, উপদেষ্টা মো. রাসেল, সংগঠনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক মোজা, মো. জামাল, মো. দেলোয়ার, মাহমুদ, মো.আরফাত, মো. ফরহাদ মোজাম্মেল হক মানিক, ইকবাল হোসেন বাবলু, বেলাল হোসেন, শাহিদুল ইসলাম, মুহাম্মদ শাহিন, মঈন উদ্দীন, শাহেদুল ইসলাম তারেক প্রমুখ। কম্বল হাতে পেয়ে স্বপ্না অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, কনকনে শীতের মধ্যে পাতলা একটি চাদর গায়ে দিয়ে খুব কষ্টে রাতে ঘুমায়। প্রবাসীরা আমাদের জন্য কম্বল পাঠিয়েছে এখন থেকে আমি আমার সন্তানদের নিয়ে আরাম করে ঘুমাতে পারবো। উল্লেখ্য প্রবাসে অবস্থানরত সংগঠনের সভাপতি মো. নেছারুল হক, সিনিয়র সহ সভাপতি মো. মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. ইশতিয়াক হোসেন জিসান ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল বিন সিকান্দারের নেতৃত্বে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ছবির ক্যাপশনঃ প্রবাসীদের উপহার কম্বল নিয়ে মুখে অকৃত্রিম হাসিতে বাড়ি ফিরছেন স্বপ্না।