পটিয়ার সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের স্ত্রী হন্তারক সন্তানের ত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ ঘাতক ছেলেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
গত ১৭ আগস্ট পিতার মৃত্যুর মাস না পেরোতেই ‘‘সম্পত্তির দ্বন্দ্বে’’ বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে মাকে খুন করলো ছেলে। সম্পত্তির ভাগ নিয়ে মায়ের সাথে কথা কাটাকাটির জেরে পটিয়ায় প্রয়াত সাবেক পৌর মেয়র শামশুল আলম মাষ্টারের ছেলে মাইনুদ্দীন মোহাম্মদ মাঈনুর গুলিতে তার মা জেসমিন আক্তার (৫০) নিহত হয়েছেন। প্রয়াত শামশুল আলম মাষ্টার তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। তৎমধ্যে
ঘাতক মঈনুল ছেলেদের মধ্যে প্রথম।
মঙ্গলবার দুপুর আড়ায় টার দিকে পৌরদরের ৫নং ওয়ার্ডস্থ ঈদুল মল্ল পাড়া এলাকার সাবেক জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র সদ্য প্রয়াত শামশুল আলম মাষ্টারের ঘরে এ ঘটনা ঘটে। খুন হওয়া জেসমিন আক্তার (৫০) প্রয়াত শামসুল আলম মাষ্টারের স্ত্রী।
এ ঘটনার পর তার মেয়ে নিপা তাকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান। ঘটনার পরপরই ঘাতক ছেলে মাইনুদ্দীন মোহাম্মদ মাঈনু পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘর তল্লাশী করে ১০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে।
নাম না বলাশর্তে শামশুল আমল মাষ্টারের একজন কাছের মানুষ ও প্রতিবেশী জানন, শামশুল আমল মাষ্টরের যে ধন-সম্পত্তি আছে তাকি তারা (ছেলে-মেয়েরা) আদোও বের করতে পারবে? শামশুল আলম মাষ্টারের কোথায় কি আছে তারা কি তা জানে? মাষ্টারের অতি আদরের ছেলে ঘাতক মাঈনুল। অতিমাত্রায় পশ্রয় ও অডেল সম্পদের কারণ আজকে আমাদের এই সব খবর শুনতে হচ্ছে। এমন পরিবরে এ ঘটনা শুনা যাবে কেউ কি কল্পনা করেছে? তাও আমাদের শুনতে হয়েছে। আমি মাষ্টারকে খুব কাছে থেকে দেখেছি মাষ্টার খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন। কিন্তু মাষ্টার তার অডেল সম্পত্তির মোহে পড়ে পরিবারের দিকে খুব কম নজর দিতেন এবং ছেলে -মেয়েদের শাসন খুব বেশি শাসন করতেননা। আজ যদি ছেলে মেয়েদের নৈতিক নৈতিকতার শিক্ষা দিত তারা পথভ্রষ্ট হতোনা। আমাদেরকেও এমন সংবাদ শুনতে হতোনা। তাই আমাদের সকলে উচিত আমাদের সন্তাদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা।
প্রতিবেশী শেলি আক্তার জানান, তাদের সাথে কোন ঝগড়াঝাটি হওয়ার আওয়াজ আমি শুনিনি তখন আমি পুকুরে ছিলাম। খুন হওয়া জেসমিন আক্তারের মেয়ে নিপাসহ স্থানীয়রা যখন দৌড়ে আসে আমি ও ঐখানে গিয়ে দেখি আমার চাচি (জেসমিন আক্তার) গুলিবৃদ্ধ হয়ে পরে আছে। পরে স্থানীয়দের সহায্য তার মেয়ে নিপাসহ তাকে পটিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকার অন্য আরেকজন জানান, শামসুল আলম মাষ্টারের প্রায় নগদ আড়াই কোটি টাকা ছিল যেটা নিয়ে কয়েকদিন ধরে ঘাতক ছেলে মাঈনুর সাথে তার মা জেসমিন আক্তারের বাকবিতন্ডা হয়ে আসছিল। হইতোবা টাকার লোভে পড়ে তার মাকে সে গুলি করে হত্যা করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘাতক মাঈনুল ছিল ইয়াবা ও মাদকের অসক্তি সে বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন থানায় ইয়াবা ও মাদক নিয়ে অনেকবার ধরাও পড়েছিল। সে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানায় ইয়াবা নিয়ে অনেকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল ঘাতক মাঈনুল। ঘাতক মাঈনুল সাথে যাদের চলাফেরা তারাও কোননা কোন মাদক কারবারি। বাবার অডেল সম্পত্তির ও সম্পদের কোন টাকাই তার জীবনের ভালো কোন অধ্যায় রচনা করতে পারেনি।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি তদন্ত রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, ঘটনার খবর পেরে আমরা ঘটনাস্থল আসি। ঘাতক ছেলেকে পাওয়া যায়নি। ঘর তল্লাশী করে ১০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করি। ঘাতক ছেলেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।