আসল আসামীর পরিবর্তে নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আসামীর সঠিক নাম ঠিকানা যাচাই বাছাই না করে পুলিশের খাম খেয়ালীর কারনে শুধু নামের মিল থাকায় এখন জেলে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে নিরপারধ দেলোয়ার।
গত ২৬ জুলাই ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানায় এ ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দায়িত্ব জ্ঞানহীন এ ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রেফতারি পরোয়ানাটি তামিলকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম এ এস আই খায়রুল। তিনি ভুজপুর থানায় কর্মরত।
আদালত সুত্র জানায়, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ অর্থঋন আদালত চট্টগ্রাম এর ২১১/২১ নং মামলায় মুল আসামী দেলোয়ার হোসাইন পিতা মরহুম বাচা মিয়া, মাতা - মাবিয়া খাতুন, সাং গ্রামপাড়া দর্জি বুইজ্জার বাড়ী। তার বিরুদ্ধে ব্রাক ব্যাংকের ৬ লাখ টাকা ঋনের বিপরীতে দায়ের করা মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার না শুধু নামের মিল থাকায় পার্শ্ববর্তি মোহাম্মদপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। চট্টগ্রাম জজ আদালতের আইনজীবী এডভোকেট মো. এমরান নাঈম জানান, গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলে কোন সন্দেহ দেখা দিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বা ইউপি মেম্বারের মাধ্যমে সেটি যাচাই বাছাই করতে হয়। কিন্তু ভুজপুর থানার এ এস আই ইফতে খাইরুল বিষয়টি যাচাই বাছাই না করে নিরপরাধ দেলোয়ারকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। বর্তমানে দেলোয়ার জেল হাজতে কারান্তরীন আছে। দেলোয়ারের পিতা বাচ্চু মিয়া বলেন, এএসআই ইফতে খাইরুলকে আসামীর সঠিক নাম ঠিকানা যাচাই বাছাই করার জন্য বার বার অনুরোধ করা হলেও তিনি তা না করে তাঁর নিরপরাধ ছেলেকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেন। তিনি জানান, তার বাড়ী মোহাম্মদপুর গ্রামে আর মামলার মুল আসামীর বাড়ী গ্রামপাড়া এলাকায়। মুল আসামীর পিতা মাতার নামের সাথেও তাদের নাম ঠিকানা মিল নাই। তিনি এ ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান।
এ ব্যাপারে এএসআই ইফতে খাইরুলের সাথে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গ্রাম পাড়া আর মোহাম্মদপুর একই এলাকা। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম ঠিকানা মুল আসামীর নাম ঠিকানার সাথে গড়মিল রয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি ওসির সাথে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, গ্রামপাড়া আর মোহাম্মদপুর দুটি আলাদা গ্রাম। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত দেলোয়ার হোসেন এ মামলার আসামি নয়। পুলিশ কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে আসামীর নাম ঠিকানা যাচাই বাছাইও করেননি বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ভুজপুর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন ফারুকীকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
পরে, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) সোয়েব আহমেদ খান বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান। এ বিষয়ে ভুজপুর থানার ওসির সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।