"আঁরা বর্মা যাইয়ুমবই, আঁরার ঘর-বাড়ি আঁরারে দিয়া প রিব', আঁরার জানর মালর হেফাজত দিয়া পরিব, আঁরা বাংলাদেশে তাই ত ন চাই" (আমরা বার্মা চলে যাব, আমারদের ঘরবাড়ি ফেরত দিতে হবে, আমাদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে হবে, আমরা বাংলাদেশে থাকতে চাইনা) সহ বিভিন্ন শ্লোগানে মুখরিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প।
নাগরিকত্ব ও ভিটে বাড়ি ফেরত, নিরাপত্তা ও অবাধ চলাচলের নিশ্চয়তা প্রদান এবং দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবীতে টেকনাফসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে সমাবেশ করেছে এদেশে আশ্রিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা।
সমাবেশে রোহিঙ্গারা ব্যানার, ফেস্টুন, ও প্ল্যাকার্ডে বিভিন্ন দাবী দাওয়া তুলে ধরেন। এতে রোহিঙ্গা নারী- পুরুষ ও যুবক- কিশোর দলে দলে অংশ গ্রহন করেন।
সকল অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও সতর্ক অবস্থানে ছিল।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বেলা ১০ টারদিকে শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প- ২৬ এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশ উপলক্ষে টেকনাফের লেদা, জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সকাল থেকে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। এছাড়া কুতুপালং, বালুখালী, লম্বাশিয়ায়ও এ ধরনের সমাবেশ হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানেও পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নিরাপদে ফিরে যাওয়ার দাবি তোলেন।
শালবাগান ২৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা বজলু রহমান বলেন, বিশ্ব এখন নানা সংকট মোকাবেলা করছে। এর প্রভাব আমরা রোহিঙ্গাদের উপরও। দিন দিন বিভিন্ন সংকট দেখা দিয়েছে। রেশন কমিয়ে আনা হয়েছে। এভাবে কুটির ঝুপড়ি ত্রিপলের ঘরে ঠেসাঠেসি যাযাবর জীবন কাটাতে চাইনা। বাংলাদেশ সরকার যেভাবে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি ও উদ্যোগ ইতিমধ্যে নিয়েছে, সেই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এই রোহিঙ্গা নেতা চারটি দাবী তুলে বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও জমিসহ ভিটে বাড়ি ফেরত, অন্যান্য জাতির মতো রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচল ও জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জোর দাবী জানান তিনি।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় ও প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা দ্রুত স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
কর্মসূচি শেষে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর জন্য দোয়া করার মাধ্যমে উক্ত সমাবেশ সমাপ্তি করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় আট লাখের রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা।