আজ রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১

টাকা নিয়ে চুপ দুই সংস্থা, টানেলের সুফল নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : রবিবার ২৮ অগাস্ট ২০২২ ১১:১৭:০০ পূর্বাহ্ন | চট্টমেট্টো

সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক ১০টি মেগাপ্রকল্পের একটি হলো বঙ্গবন্ধু টানেল। ডিসেম্বরেই বহু প্রতিক্ষার টানেলটি খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। কিন্তু টানেলের সংযোগ সড়ক (শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক) শীর্ষক প্রকল্পটির কাজই শেষ করতে পারছে না সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হলেও খুঁটিগুলো না সরানোর কারণে মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। যদি এসময়ে কাজ শেষ করা না যায় তাহলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।

প্রয়োজনীয় অর্থ ও বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সড়কের মাঝখানে থাকা খুঁটি না সরানোয় এই বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

খুঁটিগুলো দ্রুত সরাতে সর্বশেষ দুই সংস্থাকে চিঠি দেন সওজ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কার্যালয়ে। চিঠি পাওয়ার পর তিন সংস্থাকেই ডাকেন বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন।  

গত ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্রুত খুঁটিগুলো সরাতে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পিডিবি সড়ক থেকে ১৩৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটির মধ্যে ৩৩টি খুঁটি সরায়নি। এছাড়াও আরইবি ৪১৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটির মধ্যে ২১০টি এখনো সরায়নি।

চিঠিতে বলা হয়, খুঁটিগুলো অপসারণ বা স্থানান্তর করা না হলে সড়কের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণরূপে যথাসময়ে শেষ করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হলেও খুঁটির কারণে মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজ সমাপ্ত করা না গেলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। এছাড়াও কর্ণফুলী টানেল হয়ে জাতীয় মহাসড়ক এন-১ এর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে না।  

সওজ’র আরইবিকে দেওয়া চিঠি থেকে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত। উক্ত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম সড়ক সার্কেলাধীন দোহাজারী সড়ক বিভাগের জনগুরুত্বপূর্ণ ‘আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ (শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক)’ শীর্ষক প্রকল্পটি সমাপ্ত করতে হবে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণাধীন ৪ লেনে শিকলবাহা হতে আনোয়ারা (কালাবিবির দীর্ঘ) পর্যন্ত টানেল সংযোগ সড়কে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, পটিয়া, চট্টগ্রামের আওতাধীন বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। সে খুঁটিসমূহের কারণে সড়ক সম্প্রসারণ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন ৪১৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্দিষ্ট দূরত্বে স্থানান্তর/অপসারণের জন্য ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, পটিয়ার কাছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ২৪ হাজার ২৮০ টাকার দুটি চেক প্রদান করা হয়। কিন্তু ৯ মাস পার হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, পটিয়ার সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও সড়কের মাঝখানে অবস্থিত ২১০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এখনও পর্যন্ত স্থানান্তর/অপসারণ করেনি। অবশিষ্ট বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্দিষ্ট দূরত্বে স্থানান্তর/অপসারণ করা না হলে প্রকল্পের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণরূপে যথাসময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।

একইভাবে পিডিবিকে দেওয়া চিঠিতেও দোহাজারী সড়ক বিভাগের ‘আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ককে ৪-লেন উন্নীতকরণ (শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন সড়কটির নির্মাণকাজ যথাসময়ে শেষ করার লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে অবশিষ্ট ৩৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি নির্দিষ্ট সময়ে স্থানান্তর/অপসারণ করার জন্য সওজ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদ হোসেনের পক্ষ থেকে পটিয়া বিতরণ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, তিন পক্ষকে ডেকে বলে দেওয়া হয়েছে সরেজমিন গিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করতে। এরপর দ্রুত খুঁটিগুলো সরানোর উদ্যোগ নিতে। এতে প্রয়োজন হলে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে পারেন।

 

 

 

 



সবচেয়ে জনপ্রিয়