আট হাজারের বেশি মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে একটি কাঠের সেতু। দৈনন্দিন স্কুল-কলেজমুখী ছাত্র ছাত্রীদের থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, দিনমজুর, অফিসগামী মানুষের চলাচল এই সেতু দিয়ে। ৫০ ফুটের মত দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্তে গাছের খুঁটি আর কাঠের বিছানা দিয়ে তৈরি সেতুতে নিয়ম করে দূর্ঘটনা লেগে থাকে। প্রতিদিন ৪শত থেকে ৫শত সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরবাইক, বাই সাইকেল, মোটর সাইকেল, টমটম, বটভটি চলাচল করলেও কাঠের সেতুটি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ভাঙা-মেরামতের মধ্যেই দাড়িয়ে আছে। সেতুটি পাকা ব্রিজে রুপ ধারণ করতে পারেনি। ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউপির বটতলি সংলগ্ন স্থানে গজারিয়া খালে গাছের খুঁটির ওপর ভরকরে কাঠের বিছানা দিয়ে বানানো সরু সেতু দিয়ে পারাপার করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বড় বেতুয়া সুন্দিপপাড়া সড়কের উপর সেতুটি পাকা করার দাবি জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ চলাচকারী ভুক্তভোগিদের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম একটা পাকা ব্রিজের জন্য অনেক জায়গায় ধর্না দিয়েও সফল হয়নি। তবে, প্রতিবছর ক্ষুদ্র বাজেটে গাছের খুঁটি ও কাঠ দিয়ে সেতুটি তৈরি করে দেন বলে জানায় ওই এলাকার বাসিন্দারা। জানা গেছে, ফটিকছড়ি-হেয়াঁকো সড়কের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া গজারিয়া খালের উপর নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু দিয়ে বড় বেতুয়া, ছোট বেতুয়া, কাঞ্চনা, নিচিন্তা, ঠেকার দোকানসহ হাসনাবাদের কিছু অংশের মানুষ ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। একটি পাকা ব্রিজের অভাবে ভয়ে ভয়ে পারাপার করতে হয় স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শতশত শিক্ষার্থীদের। এছাড়া গ্রামগুলোতে প্রয়োজনে ভারী কোন যান চলাচল করতে হলে প্রায় ৬ থেকে ৭ কি. মি. পথ ঘুরে দাঁতমারা বাজার অথবা নারায়ণ ইউপির হাসনাবাদ সড়ক দিয়ে যেতে হয়। পাশবর্তি শান্তিরহাট বাজার হতে বেতুয়া অপর একটি সড়ক থাকলেও তার অবস্থা আরোও করুণ। সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠের তৈরি সেতু দিয়ে কোন রকম ভারী যানবাহন না চললেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক, ভ্যান, মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল। ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থ ওই সেতুতে ৫০টির মত গাছের খুঁটি দিয়ে দাঁড় করে রাখা হয়েছে। এতে কোন খুঁটি নষ্ট বা বেকে গেলে মারাত্মক দূর্ঘটনার কবলে পড়ার আশংকা রয়েছে। জহুরুল ইসলাম নামের এক দোকানদার জানান, প্রায় সময় এই সেতুতে বড় ছোট দূর্ঘটনা হয়ে থাকে। এতে অনেকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে শয্যাশায়ী হয়। যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অটোচালক মোঃ মুছা বলেন, চেয়ারম্যানের কল্যাণে সেতুর দুই পাড়ে অনেক উন্নয়ন হলেও সেতুটি কি কারণে পাকা হচ্ছেনা ঠিক জানিনা। ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পারাপার করতে হয়। অনেক ভয়ে থাকি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, এই ব্রিজের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে অনেক উন্নয়ন তহবিলে আবেদন করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি মহোদয়কে অবহিত করেছি। কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর ধরে ওই সেতু হচ্ছে হচ্ছে বলে এখনো হয়নি। সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। যাতে এলাকার মানুষের দুঃখ লাগব হয়। উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, ওই সড়কের ব্রিজটি নিয়ে গেটার চিটাগাং ফোর প্রকল্প প্রস্তাবনাতে আছে। আশাকরি অচিরেই এর সমাধান হবে।