আজ ৯ মার্চ ২০২৩ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয় ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে স্ট্রেনথেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় নগরীর কপার চিমনি রেস্টুরেন্টে টেকসই আগামীর পূর্বশর্ত লিঙ্গ সমতাঃ নির্বাচনে নারী নেতৃত্বের অগ্রগতি শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। এই আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সক্ষম করার জন্য উপস্থিত নারী নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সুপারিশমালা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে আড়াই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলের প্রধান আসনে নারী।
দুটি প্রধান দলের শীর্ষ পদে নারী নেতৃত্ব থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনৈতিক কাঠামো নারীর ক্ষমতায়নের সহায়ক নয়। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাও তাদের রাজনীতিতে আসার পথে একটি বিশাল প্রতিবন্ধকতা। রাজনৈতিক দলগুলোকে অঙ্গীকার পূরণ করতে হলে তৃণমূল পর্যায় থেকে নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দিতে হবে। তবে সংখ্যা পূরণই একমাত্র প্রতিকার নয়।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে এমন উন্নত পর্যায়ে নিতে হবে, যেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সমানভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণে আগ্রহী হন এবং রাজনীতিতে সক্রিয় অবদান রাখেন। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতন্ত্রচর্চা বৃদ্ধি করলে তৃণমূল থেকে নারী নেতৃত্বের অগ্রগতি সম্ভব। আরপিও আইনে ২০২০ সময়সীমায়, কোনো বড় রাজনৈতিক দল মূলধারার কমিটিতে ৩৩% নারীর অন্তর্ভুক্তি পুরণ করতে পারেনি। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনে ৩৩ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তির বিধান রাখার দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন নারী নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজ। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ আসনে নারীদের আরও বেশি সংখ্যক হারে মনোনয়ন বৃদ্ধির আহ্বান জানালেন চট্টগ্রামের নারী নেতারা।
অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর জাতীয় পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈমউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশানের সম্মানিত কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি'র আহবায়ক কমিঠির সদস্য এডভোকেট মোঃ মফিজুল হক ভূইয়া, দক্ষিন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ,বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক মোঃ এয়াকুব হোসেন, জাতীয় মহিলা পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি সুলতানা রহমান,
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, যুব মহিলা লীগ চট্টগ্রাম মহানগর কনভেনর সায়রা বানু রৌশনী,জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি মেহেরুন নেছা, সাধারণ সম্পাদক লায়লা ইয়াছমিন,চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি জান্নাতুল নাইম চৌধুরী রিকু, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলার সাবেক সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফারহানা আখতার, চট্টগ্রাম মহানগর এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর এর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদিকা কামরুন নাহার লিজা,মহানগর আওয়ামী লীগ এর ডিআই সিনিয়র ফেলো আবিদা আজাদ,মহানগর যুব লীগের সাবেক সহ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত, মাল্টি পার্টি এডভোকেসী ফোরাম চট্টগ্রামের আহবায়ক ও দক্ষিন জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক আওয়ামী লীগের মাস্টার ট্রেইনার ও ফেলো প্রকৌশলী সনাতন চক্রবর্তী বিজয়,সদস্য সচিব ও বিএনপির মাস্টার ট্রেইনার ও ফেলো মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী,
দক্ষিন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিলোয়ারা কায়েস সুমী,দক্ষিণ জেলা যুব দলের দপ্তর সম্পাদক ও ডিআই ফেলো মুহাম্মদ মামুনুর রশৗদ, মহানগর যুব মহিলা লীগ ফেলাে ডিআই ফেলো জিন্নাত সুলতানা ঝুমা, দক্ষিণ জেলা যুব মহিলা লীগ সদস্য দেবী রুদ্র, দক্ষিন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বহিী সদস্য কোহিনুর আক্তার (মুন্নী),জাতীয় মহিলা পার্টি সদস্য শেখ শারমিন আক্তার ,ইয়ামুন নাহার প্রমূখ । অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল - চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোঃ সদরুল আমিন ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী - মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান । সার্বিক সহযোগিতা করেন সিনিয়র অপারেশন সহকারী মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী রনি ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত টেকসই আগামীর পূর্বশর্ত লিঙ্গ সমতাঃ নির্বাচনে নারী নেতৃত্বের অগ্রগতি শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকটিইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে স্ট্রেনথেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের বাস্তবায়নে ‘নারীর জয়ে সবার জয়’ ক্যাম্পেইনের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সাল থেকে ‘নারীর জয়ে সবার জয়’ ক্যাম্পেইন রাজনৈতিক দলগুলোকে বাংলাদেশের রাজনীতি ও জনজীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় সারাদেশে ২০,০০০ এর বেশি নারী নেতাদের সমন্বয়ে একটি ক্রমবর্ধমান বহুদলীয় নেটওয়ার্ক আছে যা আজ পর্যন্ত ৬২১টি তৃণমূল কমিটিতে ৬,৮২৯ জন নারীকে অন্তর্ভুক্ত হতে সহায়তা করেছে।
ইউএসএআইডি সম্পর্কে: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশকে আট’শ কোটি ডলারেরও বেশী উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ৭ কোটি ডলারের বেশি প্রদান করেছে। ২০২০ সালে ইউএসএআইডি বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ২০ কোটিরও বেশী ডলার প্রদান করেছে। ইউএসএআইডি বাংলাদেশে যে সকল কর্মসূচিতে সহায়তা প্রদান করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধাদির সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবার উন্নয়ন ও অভিযোজন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতির সংগে খাপ খাওয়ানো।