রামুর চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদের সচিব স্বরূপা পালের বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ মিলেছে। প্রকল্পের ও বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসুচির উপকারভোগিদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ, ইউপি সদস্যদের সাথে অসদাচরণের কারণে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সচিবের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধ না করলে পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সদস্যবৃন্দ। অভিযোগকারি সদস্যরা হলেন, বেলাল উদ্দিন শাহীন, শাহাব উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, রাশেদুল হক, মইনুল আলম, নুরুল আমিন, আল মর্জিনা, গুলজার বেগম এবং মরিয়ম বেগম। সচিব সরুপা পালের অপসারণের দাবিতে গত ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। অনতিবিলম্বে দুর্নীতিবাজ সচিবকে অপসারণ করা না হলে বৃহত্তর কমর্সূচির দিকে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষুব্দ জনপ্রতিনিধিরা। অভিযুক্ত স্বরূপার নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও আত্মসাতের ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন পরিষদের সদস্যরা। একজন সচিব একই পরিষদে কয় বছর থাকে? প্রশ্ন সবার। চাকমারকুল ইউপির ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বেলাল উদ্দিন শাহীন অভিযোগ করে বলেন, 'সচিব সরুপা পাল দীর্ঘ ১১ বছর যাবৎ চাকুরী করছেন। কোন মেম্বারকে তিনি পাত্তা দেন না। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামের চিঠিপত্র গোপন করেন। তার কারণে কোথায় কি হচ্ছে, অনেক সময় আমরা জানতেও পারি না।' তিনি বলেন, 'বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দকৃত প্রকল্পের চেক নিতে তাকে নির্দিষ্ট কমিশন দিতে হয়। জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ নিতে আসা লোকদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করে আমাদের বেকায়দায় ফেলেন। প্রতিবাদ করলে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ভয়ভীতি দেখায়। তার কাছে পুরো পরিষদ জিম্মি।' অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সচিব স্বরূপা পাল বলেন, 'ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। মেম্বারগন মনে করছেন, আমি তাদের পক্ষে চেয়ারম্যানকে বলছি না। তাদের দাবি-দাওয়া উত্থাপন করছি না। সে কারণে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে মেম্বারগন। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মোটেও সত্য নয়।' তিনি বলেন, '২০১১ সালে চাকুরিতে যোগদান করি। একই কর্মস্থলে অনেক দিন হয়ে গেছে। বদলি হতে আবেদনও করেছি। গেল ইউএনও স্যার থেকে আবেদনের ফরওয়ার্ড নিয়ে ডিডি এলজির কাছে জমা দিয়েছিলাম। তবু বদলির আদেশ হলো না। আমি এখনো বদলি হতে ইচ্ছুক। সেটি মেম্বারদেরকেও বলা হয়েছে। তারাও চেষ্টা করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।' চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, 'সচিবের নানা অনিয়ম নিয়ে মেম্বারগণ বহুদিন থেকে অভিযোগ করে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে মেম্বারগণ পরিষদে আসছেন না। বিষয়টি আমি এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলকে জানিয়েছি।' চেয়ারম্যান বলেন, 'জনগণকে তো কষ্ট দেয়া যাবে না। পরিষদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সচিবের বিষয়ে একটা সুরাহা হওয়া দরকার।' এ বিষয়ে জানতে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফাকে একাধিকবার কল দেয়া হয়। কল রিসিভ না করায় ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোন উত্তর মেলেনি। সচিব স্বরূপা পালকে অনতিবিলম্বে অপসারণ চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।