মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইদুল আজহার ঈদ মাত্র আর কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনো বেচাকেনা কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাজারে বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, গরু চুরি বৃদ্ধির কারণে কোরবানি দাতারা আগেভাগে গরু কিনছেন না এবার । বেশীরভাগ ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, চুরির ভয়ে তারা দুই-একদিন আগে গরু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে চন্দনাইশের বিভিন্ন বাজারে পশুর হাট। সপ্তাহের দু-দিন ছাড়াও গ্রাহকদের সুবিধার্থে ঈদের আগ পর্যন্ত প্রতিদিনই সকালবেলায় বসবে হাট। বিক্রেতারা বলছেন,গতবছরের তুলনায় ভালো দামে গরু-মহিষ বিক্রি হবে এবার। বড় গরুর তুলনায় ৩ থেকে ৫ মণ ওজনের মাঝারি গরু চাহিদার শীর্ষে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই ) সরেজমিনে উপজেলার খানহাট বাজারে গিয়ে দেখা গেছে গরু-মহিষের সরবরাহ বেশ ভালো। দূর-দূরান্তের ক্রেতারা এসেছেন কোরবানির পশু কিনতে। তবে, কিনতে নয় দর-দাম দেখতে। মাঝারি ও কোরবানিযোগ্য ছোট গরুর চাহিদা অপেক্ষাকৃত বেশি। আমদানি বেশি হওয়ার সাথে সাথে দামের ক্ষেত্রে প্রতি গরুতে গতবারের তুলনায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
এই হাটে গরু বিক্রি করতে আসা পাহাড়ি অঞ্চল ধোপাছড়ির এক গরু ব্যবসায়ীকে দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে বাড়ি বাড়ি গরু কিনে এনে তিনি হাটে এই বিক্রি করেন। ঈদের হাট জমজমাট থাকে আর প্রতিটা গরুতে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ করেন তিনি। লাল রঙের এক ষাঁড়ের দাম হাঁকলেন ৮০ হাজার।
গরুর খামারিরা জানান, গতবারের চেয়ে এইবার গরু প্রতি দাম বেশি হবে। কিন্তু গরুর উৎপাদন খরচ বাড়লেও সেই তুলনায় বাড়েনি গরুর দাম। তিনি বলেন, গরুর খাদ্য কিনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে। আগে যেই গমের ভুষি ১২’শ টাকা ছিলো সেই ভুষি এখন ১৬৫০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।একটা গরু প্রতিদিন ৫ থেকে ৬শ’ টাকার খাবার খাচ্ছে সেই হিসেবে দাম কতটুকু বেড়েছে আপনারা হিসেব করেন।
চন্দনাইশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: রূপেন চাকমা বলেন, চন্দনাইশে কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা অনুমানিক ২৮ হাজার ৫০টি গবাদি পশু উৎপাদন ৪০ হাজার সংখ্যা ৮'শ ৫৪। খামারি সংখ্যা ছোট বড় হিসেবে ১৭৯টি। ষাড়,বলদ,গাভী মোট ৩৯হাজার ৬'শ ৫৩টি। মহিষ,ছাগল,ভেড়া মোট ৪০ হাজার ৮'শ ৫৪টি। বাজার স্হায়ী ২টি বাগিচা হাট,কালী হাট,অস্হায়ী ১১টি পশুর যোগান বেশি থাকায় এবার ঈদ বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারত থেকে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে গরু আমদানি বন্ধের বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। বাইরে থেকে কোন পশু আসবে না। তাই খামারিরা ভালো দাম পাবেন। এইবার কোরবানির জন্য দেশে পর্যাপ্ত পশু রয়েছে। নিজেদের পশু দিয়েই দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা মিটাতে পারবে। চাহিদার চেয়ে বেশি পশু আছে। আর হাটে কোন ক্রেতা-বিক্রেতা অসুস্থ হলে তাদের জন্য একজন চিকিৎসক এবং গরুর জন্য ভেটেরিনারি ডাক্তার থাকবেন বলে তিনি জানান।