১৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলা সদর গাছবাড়িয়া সরকারী কলেজ ময়দানে দাওয়াতে খায়র ইজতিমা শুরু হয়। রাত ৮ টায় মিলাদ কিয়াম ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতিমা শেষ হয়। ইজতিমায় যোগ দিতে ভোর থেকে দূরদূরান্ত থেকে লাখো মানুষ বাস, মোটর সাইকেল ও পায়ে হেঁটে ইজতিমায় অংশগ্রহণ করেন। মুয়াল্লিম মাওলানা এমরান হোসেনের সঞ্চালনায় ইজতিমা শুরু হয়। প্রধান মুয়াল্লিম আল্লামা এম. এ. মান্নান দাওয়াতে খায়র এর ফজিলত ও গুরুত্বের উপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এছাড়া দিনব্যাপী দাওয়াতে খায়র ইজতিমায় ইসলামী শরীয়তের আহকাম। ইমান, আক্কীদা, আমল ও বিধি বিধানের উপর গুরুত্বপূর্ণ বয়ান দেন শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফেজ সোলায়মান আনসারী, আল্লামা মুফতি আবদুল ওয়াজেদ, আল্লামা হাফেজ আশরাফুজ্জামান আল কাদেরী, মাওলানা হারুন উর রশীদ চৌধুরী, অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান নিজামী, মাওলানা জুলফিকার আলী, মাওলানা বদিউল আলম রিজভী, ড. মাওলানা সাইফুল আলম, অধ্যাপক মাওলনাা আবদুন নুর আনসারী, মাওলানা মুফতি আহমদ হোসাইন আল কাদেরী, ড. মাওলানা ইসমাইল নোমানী, মাওলানা মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম কাদেরী, অধ্যাপক মাওলানা সৈয়দ জালাল উদ্দীন আল আজাহারী, মাওলানা সোলাইমান ফারুকী, হাফেজ মাওলানা আনিসুজ্জামানসহ ৩৬টি বিষয়ে ৩৬ জন মুয়াল্লিম বয়ানে অংশগ্রহণ করেন। ইজতিমায় দাওয়াতে খায়র এর প্রধান মুয়াল্লিম আল্লামা এস. এ. মান্নান দাওয়াতে খায়র এবং জুমার ফজিলতের উপর গুরুত্বপূর্ণ বয়ান উপস্থাপন করে বলেন, ইসলামের সার্বজনীন আহবান সর্বস্তরের মানবজাতির কাছে পৌঁছিয়ে দিতে দাওয়াতের গরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। দাওয়াতে খায়র এর মূলকাজ হচ্ছে ইসলামের পথে সাধারণ মানুষকে আহবান করা। ইসলামের সকল আরকাম এবং আহকামের বিষয়ে সাধারণ মুসলমানদের প্রশিক্ষণ দেয়া মৌলিক আক্বীদা বিষয়ে সচেতন করা। তিনি বলেন, জুমার দিন এবং জুমার নামাজ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ দিন ও আমল। এদিনে অধিক পরিমান দরুদ শরীফ পড়া এবং সন্নাতগুলো সঠিকভাবে আদায় করার মধ্যে অধিক ফজিলত রয়েছে অথচ আমরা দু’রকাত ফরজ আদায় করে জুমার নামাজের অধিক সওয়াবের প্রত্যাশা করি। তিনি ফরজের পাশাপাশি সুন্নাত ও ওয়াজিব আমলগুলো পালনে মুসলমানদের আন্তরিক হওয়ার জন্য আহবান জানান। বয়ানে অন্যান্য আলোচনা করে বলেন ইসলাম পরিপূর্ণ একটি জীবন বিধান, মানুষের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় ইসলামের যে হকুম ও বিধান রয়েছে তা যথাযথ অনুসরণ করা জরুরি। তারা সকল প্রকার অপসংস্কৃতি, বদ আক্কীদা থেকে মুসলমানদের দূরে থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, ইসলামের মৌলিক বিধান পালন করে যদি নানা পাপাচারে লিপ্ত থাকেন। তবে তাতে মুক্তি আসবেনা। ইসলামের সকল আমল সঠিকভাবে পারন ও সুন্নাতে নববীর অনুসরণ এবং আউলিয়ায়ে কেরাম বুর্যুগানে দ্বীনদের পথে ও মতে জীবন পরিচালনার মধ্যে মুক্তি নিহীত। তারা বলেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায়ে কিশোর অপরাধ, মাদক, বাল্যবিবাহ, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পারিপার্ষিক সহিংসতার কারণে কুলুষিত হয়ে পড়েছে। অথচ ইসলাম এবং রাসুলে পাক (সাঃ) শিশু কিশোরদের শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার তাদের অপরাধ মূলক কাজে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে। সুদ, ঘুষ ও মাদক সেবনকে হারাম করা হয়েছে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণকারীদের ব্যাপারে কঠোর শান্তির বিধান রাখা হয়েছে। নারীদের প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে বিবাহ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তারা বলেন, ইসলামের বিধান ও রাসুলে করিম (সাঃ) এর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করলে একটি কল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে। অবক্ষয় ও অনৈতিকতা লোপ পাবে। ইজতিমায় পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম এবং চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি তৌহিদুল আলম, মক্কা আ.লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক দাওয়াতে খায়ের ইজতিমায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দাওয়াত খায়ের বাস্তবায়ন কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির আলহাজ্ব পেয়ার মুহাম্মদ কমিশনার, আলহাজ্ব আনোয়ারুল হক, আলহাজ্ব আবদুল হামিদ, শাহজাদা ইবনে দিদার, এড. মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ার, মাহবুব ইলাহি সিকদার, মাহবুবুল হক খান, অধ্যক্ষ আবু তালেব, দক্ষিণ জেলা দাওয়াতে খায়ের বাস্তবায়ন কমিটির আলহাজ্ব কমরুদ্দিন সকুর, মহানগরের তসকির আহনদ মাওলানা আবদুল্লাহ উত্তর জেলার জমির উদদঈন মাষ্টার ও এড. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, হাবীব উল্লাহ মাষ্টার, ওবায়দুল হক হক্কানী, নেজামত আলী বাবুল, হারুনুর রশীদ, শেখ সালাউদ্দীন মোজাফ্ফর আহমদ, আবুল মনসুর, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, হাজী শফিকুল ইসলাম, মাওলানা গফুর খান, নজরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক তালুকদার, মাওলানা নুরুল ইসলাম এরশাদ খতিবী ও দস্তগীর প্রমুখ। বাদে এশা মিলাদ কিয়াম ও আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতিমা শেষে হয়।